বৃহস্পতিবার অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারের নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। ৮ বছরে এই প্রথমবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছুঁয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে দিয়েছে (Russia Ukraine Crisis)। যুদ্ধ ঘোষণার ফলে এ অঞ্চলে জ্বালানির রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। রাশিয়া প্রধানত ইউরোপীয় শোধনাগারগুলিতে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করে। এটি ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের বৃহত্তম সরবরাহকারী। ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের মোট সরবরাহের প্রায় ৩৫% আসে রাশিয়া থেকেই।
বৃহস্পতিবার লেনদেনের সময়, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ৪.৩৯ শতাংশ বেড়ে ১০১.০৯ ডলার ছুঁয়েছে। একই সময়ে, ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ৪.৩৩ শতাংশ বেড়ে ৯৬.০৯ ডলার হয়েছে। যুদ্ধ ঘোষণার পর ইউক্রেনের ১১টি শহরে একযোগে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোকে টার্গেট করা হয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, দেশটির নৌবাহিনীর বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। কিয়েভ এবং খারকিভে ইউক্রেনের সামরিক কমান্ড পোস্ট বড়সড় রকেট হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। ভারত তার প্রয়োজনীয় তেলের ৮০ শতাংশই আমদানি করে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার ৫০ শতাংশও আমদানি করা হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের জেরে বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। বৃহস্পতিবার অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়েছে এবং নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আগামী মাসে পাঁচ রাজ্য নির্বাচন শেষ হওয়ার পর দেশে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম দ্রুত বাড়বে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
কেন্দ্রীয় তেল মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি আর্থিক বছরে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর ২০২১-এর মধ্যে ভারত ৮২.৪ বিলিয়ন ডলারের তেল আমদানি করেছে। এটি আগের আর্থিক বছরের তুলনায় বিলের ১০৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে, এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর ২০২০-এর মধ্যে, ভারত ৩৯.৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য মোট তেল আমদানির খরচ ছিল ৬২.২ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য এই খরচ ছিল ১০১.৪ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খরচ ছিল ১১২ বিলিয়ন ডলার।