scorecardresearch
 

Tata Motors: সিঙ্গুরে কারখানা হয়নি, টাটাকে ৭৬৬ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে

পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুরে অটোমোবাইল কারখানা বানানোর জন্য মূলধন বিনিয়োগ করেছিল টাটারা। ওই জমি ছেড়ে দেওয়ার ফলে বিপুল লোকসান হয় তাদের।

Advertisement
টাটা মোটরস। টাটা মোটরস।

সিঙ্গুর-ন্যানো প্রজেক্ট মামলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের মামলায় জিতল টাটা মোটরস। টাটা মোটরস লিমিটেড বিবৃতিতে জানিয়েছে যে সিঙ্গুর-ন্যানো প্রকল্প মামলায় পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনকে সুদ সমেত ৭৬৬ কোটি টাকা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে মধ্যস্থতাকারী প্যানেল।

পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুরে অটোমোবাইল কারখানা বানানোর জন্য মূলধন বিনিয়োগ করেছিল টাটারা। ওই জমি ছেড়ে দেওয়ার ফলে বিপুল লোকসান হয় তাদের। বিনিয়োগের টাকা পুনরুদ্ধারের জন্য WBIDC-র কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল টাটা মোটরস। পশ্চিমবঙ্গের শিল্প, বাণিজ্য ও এন্টারপ্রাইজ বিভাগের নোডাল সংস্থা WBIDC।

সোমবার এক্সচেঞ্জ ফাইলিংয়ে গাড়ি নির্মাতা সংস্থা টাটা মোটরস জানিয়েছে, তিন সদস্যের মধ্যস্থতাকারী ট্রাইব্যুনাল টাটা মোটরসের পক্ষে সর্বসম্মত রায় দিয়েছে। সংস্থাকে ৭৬৫.৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো ক্ষতিপূরণের না দেওয়া পর্যন্ত ১১ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে। পাশাপাশি মামলার খরচ বাবদ ১ কোটি টাকাও আদায় করবে বলে জানিয়েছে টাটা মোটরস।

২০০৬ সালে ১৮ মে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান রতন টাটা পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তৎকালীন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নিরুপম সেনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকের পর সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের ছোট গাড়ি তৈরির কারখানা করার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। এরপর প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ১ হাজার একর জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০০৬ সালে ২৭ মে থেকে ৪ জুলাইয়ের মধ্যে হুগলি জেলা প্রশাসন তিনটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকে। তৃণমূল কংগ্রেস ওই বৈঠকগুলি বয়কট করে। ৩০ নভেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিঙ্গুরে যেতে পুলিশ বাধা দেওয়ার পরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ব্যাপক হট্টগোল হয়েছিল। বিধানসভা ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের বিরুদ্ধে। 

সিঙ্গুর প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে কলকাতার এসপ্ল্যানেডে আমরণ অনশন শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের মতো নেতারা তাঁর ২৫ দিনের অনশনের সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এদিকে, গোটা রাজ্যে আন্দোলন চলতে থাকে। ২০০৮ সালের ১৮ অগাস্ট এবং ২৫ অগাস্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু প্রত্যাখ্যান করেন মমতা। ২০০৮ সালের ২৪ অগাস্ট সিঙ্গুরের ন্যানো সাইট সংলগ্ন দুর্গাপুর এক্সপ্রেস হাইওয়েতে বিক্ষোভ শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা এক হাজার একর জমির মধ্যে অনিচ্ছুক জমিদাতাদের ৪০০ একর জমি ফেরত দেওয়ার দাবি করেন। মধ্যস্থতার চেষ্টা হলেও অনড় থাকেন তৃণমূল নেত্রী। ২ সেপ্টেম্বর মধ্যস্থতার চেষ্টা হয়েছিল। কোনও ফল মেলেনি। ৩ অক্টোবর বিকেলে দুর্গাপুজোর দু'দিন আগে রতন টাটা কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেন, ন্যানো প্রকল্প সিঙ্গুর থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তোলেন। টাটারা কারখানা গড়েন গুজরাতের সানন্দে।    

Advertisement

Advertisement