পুজোয় আগেই ডিএ পাওয়ার দাবিতে আজ মঙ্গলবার ও বুধবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সরকারি কর্মীরা। ডিএ-র আন্দোলনকারী মঞ্চ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের দাবি, সকাল থেকে ভালো সাড়া ফেলেছে এই কর্মবিরতি। কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় সরকারি দফতরে কর্মীরা উপস্থিত থাকলেও তাঁরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এর আগেও একাধিকবার সরকারি কর্মীদের সংগঠন কর্মবিরতির ডাক দেয়। গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে কর্মবিরতি পালন করে সরকারি কর্মীরা। তার আগে কড়া নির্দশিকা জারি করা হয় নবান্নের তরফে। মার্চের সেই নির্দেশিকায় জানানো হয়, একদিনের বেতন কাটা হবে। আবার ফেব্রুয়ারিতে নির্দেশ জারি করা হয়েছিল, কর্মজীবনের একদিন কাটা হবে যদি কেউ কর্মবিরতির পথে হাঁটেন।
এদিকে ১০ ও ১১ তারিখের কর্মবিরতির পর অনেক সরকারি কর্মীর মনে প্রশ্ন, তাহলে কি এই দুই দিন কর্মবিরতি পালন করলেও বেতন কাটা হবে বা কর্মজীবন থেকে ২ দিন কেটে নেওয়া হবে? নবান্ন সূত্রে খবর, হাজিরা খাতায় সই করে আন্দোলন করার জন্য কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নির্দেশিকা জারি করেনি রাজ্য সরকার। তবে সরকারি অফিসগুলিতে এই দু’দিন যাতে স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম চলে, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের দাবি, এই কর্মবিরতিতে রাজ্য সরকার কর্মীদের কোনও বাধা দিতে পারে না। কারণ নির্দেশিকা জারি করা হয়নি সরকারের তরফে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আরও দাবি, কর্মবিরতি সরকারি কর্মীদের অধিকার। আর তা থেকে কর্মীদের বঞ্চিত করতে পারে না রাজ্য সরকার। তাদের এও দাবি, এই নিয়ে SAT ও হাইকোর্টে মামলা চলছে। তবে সেই মামলার রায়দান এখন স্থগিত রয়েছে। তাই কোনওভাবেই সরকার কর্মচারীদের বেতন কাটতে পারবে না।
এই বিষয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'এর আগে যখন আমরা কর্মবিরতি ডেকে ছিলাম তখন সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে শাস্তির নিদান দেওয়া হয়। এই মামলাটা SAT-এ উঠেছিল। তার শুনানি হয়েছে। পরবর্তী শুনানি ডিসেম্বরে হতে পারে। এছাড়া হাইকোর্টেও এই নিয়ে মামলা চলছে।'
ভাস্কর ঘোষের আরও দাবি, গত ১২ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার কর্মচারীদের নানা অধিকারের পাশাপাশি কর্মবিরতির অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। সেই কারণে তাঁদের কোর্টের শরণাপন্ন হতে হয়েছিল। কোর্টের হস্তক্ষেপের জন্যই নবান্ন এবার আর নির্দেশিকা জারির সাহস দেখাতে পারেনি।
প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ডিএ আন্দোলন। শহিদ মিনারে অনশনও করেছিলেন সরকারি কর্মীরা। তাঁরা নবান্নেও যান। সরকার পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবি করেন। তবে সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। এই আবহে পুজোর আগে নতুন করে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে চলেছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা।