সম্প্রতি রাজ্য সরকারের কর্মীদের আরও ৪ শতাংশ ডিএ (Dearness Allowance)ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন ডিএ কার্যকর হবে। কিন্তু এই ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে মোটেও খুশি নন সরকারি কর্মীদের একাংশ। বিশেষ করে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাঁরা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন, এই ডিএ তাঁদের কাছে ভিক্ষার মতো। তা নিয়ে bangla.aajtak.in-কে প্রথম প্রতিক্রিয়া দেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেন, 'এবার ডিএ আন্দোলনকারীরা কাজকর্মে মন দিন। ১০ শতাংশ তো পাচ্ছেন।' সেই ইস্যুতে মানস ভুঁইয়াকে আক্রমণ করল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাঁদের দাবি AICPI মেনে ডিএ দেওয়া ও রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের চাকরির দাবি মেটার পরই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন তাঁরা।
মানস ভুঁইয়া বলেন, 'আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন সুযোগ পাবেন সেদিনই সরকারি কর্মীদের দাবি দাওয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন। একথা তো আগেই বলেছিলেন। সেই মোতাবেক, আরও ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাড়ানো হল। এখন থেকে ১০ শতাংশ হারে ডিএ পাবেন সরকারি কর্মী, শিক্ষক, পেনশনাররা। কেন্দ্র সরকার যদি বঞ্চনা না করত তাহলে হয়তো আরও সহানুভূতিশীল হতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
তারপর মানস ভুঁইয়া ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, 'এরপরও কি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ তাঁবু খাটিয়ে আন্দোলন করবেন? রাজ্য সরকারের নিন্দা আর মুখ্যমন্ত্রীকে গালমন্দ করবেন ? এবার আসুন। নিজেদের দফতরের চেয়ারে বসুন। কাজকর্ম করুন। আর কতদিন এসব আন্দোলন করবেন? সরকারের কাজের অগ্রগতিতে হাত লাগান।'
রাজ্যের মন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাদের তরফে ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'আগে সরকার পুরো ডিএ মেটাক তবে তো আন্দোলন ওঠানোর প্রশ্ন আসবে। আর মন্ত্রী শুধু ডিএ-র কথা কেন বলছেন। শূন্যপদে নিয়োগের যে দাবি আমাদের আছে তা নিয়ে টুঁ শব্দটিও তো করছেন না। মানসবাবু বলেছেন, আমরা তাঁবু খাটিয়ে বসে আছি। উনি বোধহয় জানেন না যে, আমাদের এটা অধিকার। আর কাজকর্ম, চাকরি করেই তা করছি। তাই তাঁর অভিযোগ ভিত্তিহীন।'
ভাস্কর ঘোষ আরও বলেন, 'মুখ্য়মন্ত্রী ডিএ দিয়ে আমাদের দয়া তো করেননি। কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কর্মচারীদের প্রতি দয়া করতে পারেন না। এটা অধিকার। সব রাজ্যে যে হারে ডিএ দেওয়া হচ্ছে তা আমাদেরও দেওয়া হোক, তাহলেই তো মিটে যাবে সমাধান। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের পরামর্শ উনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইলে আমাদের পুরো বকেয়া মিটিয়ে দিন।'
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারি কর্মী-অশিক্ষক কর্মী-শিক্ষক সবার জন্য আরও ৪ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন। ফলে এখন ১০ শতাংশ ডিএ অ্যাকাউন্টে ঢুকবে সরকারি কর্মীদের। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এতে ১৪ লাখ সরকারি কর্মী ও পেনশনার উপকৃত হবেন। সরকারের খরচ হবে ২৪০০ কোটি টাকা। এর আগে তাঁদের সরকার ১২৫ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেছিল। আর নতুন ঘোষণার পর থেকে ডিএ বেড়ে হল ১৩৫ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেন, কেন্দ্রের ডিএ নীতি ও রাজ্যের নীতি আলাদা। তাই কেন্দ্রের সঙ্গে ডিএ-র তুলনা করলে চলবে না। ডিএ দেবে কি দেবে না তা রাজ্য সরকারের ঐচ্ছিক বিষয়। তা কখনও বাধ্যতামূলক নয়।