একটা সময় দেশের অর্থনীতিকে নেতৃত্ব দিত বাংলা। সেই দিন আর নেই। ক্রমেই পিছিয়েছে এ রাজ্য। পিছোতে পিছোতে এখন একেবারে তলানিতে ঠেকেছে বাংলার আর্থিক উন্নয়ন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের রিপোর্টে (Economic Advisory Council to the Prime Minister) এমনই উদ্বেগজনক তথ্য ধরা দিল। ওই রিপোর্ট বলছে,দেশের জিডিপি-তে অবদানের নিরিখে বাংলা ছাপিয়ে গিয়েছে কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কেরল ও তামিলনাড়ুর মতো দক্ষিণের রাজ্যগুলি। আর এক সময়ের 'সোনার বাংলা' আজ পিছনের সারিতে (West Bengal’s Economic Decline)।
একটা পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিচ্ছে বাংলা কতখানি পিছিয়ে গিয়েছে। ১৯৬০-৬১ আর্থিক বছরে দেশের জিডিপি (GDP)-তে বাংলার অংশীদারিত্ব ছিল শীর্ষে। ১০.৫% অবদান ছিল খালি বাংলার। সেটাই আজকের দিনে কমে হয়েছে ৫.৬%। রাজ্যের মাথা পিছু আয় একটা সময় জাতীয় গড়ের ১২৭.৫% ছিল। সেটাই কমে হয়েছে ৮৩.৭%। এমন অবস্থা যে রাজস্থান এবং ওডিশার মতো রাজ্য যারা ঐতিহাসিকভাবে পিছিয়ে পড়া, তাদেরও পিছনে চলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'কয়েক দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হচ্ছে। অবাক করার মতো বিষয় হল, শিল্পের গৌরবময় ইতিহাস, বন্দর ও যোগাযোগের সুবিধা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি নিম্নগামী।' আগের অর্থনৈতিক উন্নতি কেন পশ্চিমবঙ্গ ধরে রাখতে পারেনি, তা বিস্মিত করেছে বিশেষজ্ঞদের। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বন্দর রয়েছে এমন রাজ্যগুলি এগিয়ে গিয়েছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে তা হল না।
প্রশ্ন হল কেন পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে থেকেও ধীরে ধীরে পিছনের সারিতে চলে গেল? এর পিছনে অন্যতম কারণ- মনমোহন সিং দেশের অর্থনীতির দ্বার উন্মুক্ত করার পর থেকে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ। সেটাই রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯৯১ সালের পর থেকে দক্ষিণের রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক বৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো। পাঁচটি রাজ্যের মাথা পিছু আয় ছিল জাতীয় গড়ের কম। সেই ৫ রাজ্য এখন দেশের অর্থনীতিকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের মিলিত অবদান ৩০ শতাংশ (Southern States 30% of India’s GDP)। ২০১৪ সালে গঠিত নতুন রাজ্য তেলেঙ্গানার অর্থনৈতিক উন্নতিও চমকে দেওয়ার মতো।