scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: ভারত নয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাইরাল ভিডিয়োটি ইন্দোনেশিয়ার

ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করে একজন ইংরেজিতে লিখেছেন, "রোহিঙ্গাদের এই দুর্বিসহ অবস্থা দেখে আমার মাথা লজ্জায় নত হয়ে যাচ্ছে। হৃদয়বিদারক। আমরা কি মঙ্গল গ্রহে বসবাস করি?"

Advertisement
ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট

রোহিঙ্গাদের সমস্যা গোট বিশ্বের কাছে একটা বড় চিন্তার কারণ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মায়ানমারে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। অভিযোগ, সেই কারণে রোহিঙ্গাদের উপর চড়াও হয় ওই দেশের সেনা। অত্যাচারের কারণে ২০১৭ সাল থেকে মায়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছিলেন রোহিঙ্গারা। এরপর  সমুদ্র পথে পালিয়ে অন্যান্য দেশেও আশ্রয় নিয়ে থাকে তাঁরা।

এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে একটি ভিডিয়ো। যাতে পুরুষ, মহিলা, শিশু-সহ একদল মানুষকে মাটিতে পড়ে থেকে আর্তনাদ করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করে একজন ইংরেজিতে লিখেছেন, "রোহিঙ্গাদের এই দুর্বিসহ অবস্থা দেখে আমার মাথা লজ্জায় ঝুঁকে যাচ্ছে। হৃদয়বিদারক। আমরা কি মঙ্গল গ্রহে বসবাস করি?" একই সঙ্গে ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ু সেনা ও ভারতীয় নৌসেনাকে ট্যাগ করছেন ওই ব্যক্তি। ভিডিয়োটির আর্কাইভ ভার্সান দেখা যাবে এখানে।


যদিও ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভিডিয়োটির সঙ্গে দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। ভাইরাল ভিডিয়োটির সঙ্গে ভারতের কোনও যোগ নেই।

আফয়া অনুসন্ধান

ভাইরাল ভিডিয়োটির একটি কিফ্রেমের রিভার্স সার্চ করলে, Aceh নামের একটি টুইটার হ্যান্ডেলে আমরা ভাইরাল ভিডিয়োটির মতোই একটি ভিডিয়ো এবং বেশ কিছু ছবি দেখতে পাই। ২৬ ডিসেম্বর সেগুলো আপলোড করা হয়েছিল। পোস্টের হেডার থেকে জানা যায়, মায়ানমার থেকে পালিয়ে একদল রোহিঙ্গা মুসলিম ইন্দোনেশিয়ার অ্যাচে প্রদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয়রা ওই শরনার্থীদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। এর ঠিক একদিন আগে আরও ৬০ জন রোহিঙ্গা অ্যাচে প্রদেশের পালিয়ে এসেছিল।  


এরপর আরও খুঁজলে ২৭ ডিসেম্বরের একটি ভিডিয়ো আমাদের নজরে পড়ে। VIVA.CO.ID নামের একটি ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে ওই ভিডিয়োটি আপলোড করা হয়। 185 Imigran Rohingya Terdampar di Aceh dengan Kondisi Memprihatinkan শিরোনামে আপলোড হওয়া ভিডিয়োটি থেকে জানা যায়, ২৬ ডিসেম্বর হঠাৎ করেই ইন্দোনেশিয়ার অ্যাচে প্রদেশে এসে আশ্রয় নেন প্রায় ১৮৫ জয় শরণার্থী। ইউটিউবের ভিডিয়োটির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিয়োটির অনেকাংশে মিলও পাওয়া যায়। 

Advertisement


২৭ ডিসেম্বরই এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল আলজাজিরাতে। "Second boat with 185 Rohingya arrives in Indonesia’s Aceh"- শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন বলা হয়েছে যে, এক সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে ভেসে রোহিঙ্গাদের একটি কাঠের বোট প্রায় ১৮৫ জন শরণার্থী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাংশের অ্যাচে প্রদেশে হাজির হয়েছে। যে দলে রয়েছে আনুমানিক ৮৩ জন পুরুষ, ৭০ জন মহিলা ও ৩২ টি শিশু। হাজির হওয়া ওই শরনার্থীদের শরীরের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। 

২৭ ডিসেম্বর ও ২৮ ডিসেম্বর ওই একই খবর প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে Outlook India এবং Qatar-Tribune -এও। সুতরাং, এর থেকেই প্রমাণিত যে ভাইরাস ভিডিয়োটির সঙ্গে ভারতের কোনও যোগ নেই। ভিডিয়োটি আসরে মায়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়া পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের। 
 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ু সেনা ও ভারতীয় নৌসেনাকে ট্যাগ করে একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, রোহিঙ্গাদের এই দুর্বিসহ অবস্থা দেখে লজ্জায় মাথানত হয়ে যাচ্ছে।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিয়োটির সঙ্গে দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। এর সঙ্গে ভারতের কোনও যোগ নেই। ভিডিয়োটি আসলে ইন্দোনেশিয়ার।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement