গত ৬ ফেব্রুয়ারি ধ্বংসলীলার সাক্ষী থেকেছে তুরস্ক ও সিরিয়া। বর্তমানে দ্রুতগতিতে উদ্ধারকার্য চলছে, তবে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনও এই ভূমিকম্পের নানা ধরনের ভিডিয়ো ভাইরাল হচ্ছে।
এমনই একটি ভিডিয়ো বেশ ভাইরাল হয়েছে যা কোনও ড্রোনের ক্যামেরা থেকে রেকর্ড করা। ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, পরপর ১৫টি আকাশছোঁয়া অট্টলিকা ধুলোয় মিশে যাচ্ছে।
ভিডিয়োটি শেয়ার করে অনেকেই এটিকে তুরস্কের বলে দাবি করেছেন। ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করে তার সঙ্গে Turkey এবং Turkey Earthquake এর মতো হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে।
কেউ কেউ আবার ভিডিয়োটি শেয়ার করে প্রশ্ন করছেন যে এভাবে বড় বড় বিল্ডিং ভেঙে পড়া কীভাবে সম্ভব! ভিডিয়োটির আর্কাইভ সংস্করণ এখানে দেখা যাবে।
How is possible something collapse like that?😳 anybody who is from building specialty, can help me to explain??? pic.twitter.com/GZ7xNAKI46
— Lepa⚜️ (@lepanigeria) February 7, 2023
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিয়োটি তুরস্কের নয়, বরং চিনের। সেই সঙ্গে এই ইমারতগুলির ভেঙে পড়ার সঙ্গে ভূমিকম্পের কোনও সম্পর্ক নেই।
আফয়া তদন্ত
ভাইরাল ভিডিয়োটি থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করতেই আমরা লোকমতের একটি মারাঠি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের কভার ছবিতেও ওই একই গগনচুম্বী বিল্ডিংয়ের ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যে ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে সেটি চিনের ইউনান প্রভিন্সের যেখানে বিস্ফোরকের সাহায্যে এই সুবিশাল ১৫টি অট্টালিকা-সম বহুতল ভেঙে ফেলা হয়েছিল।
ওই প্রতিবেদনের মধ্যেই আমরা আরও দুটি টুইট দেখতে পাই। ওই টুইটে এই একই ভিডিয়ো আপলোড করেন জন হার্টলি নামের এক গবেষক। তিনি ভিডিয়োটি পোস্ট করে লেখেন, পর্যাপ্ত চাহিদা না তৈরি হওয়ার কারণে চিনের লিয়াং স্টার সিটি ফেজ় টু প্রকল্পের ১৫টি বহুতল ভেঙে ফেলা হচ্ছে যার কাজ বিগত আট বছর যাবত আটকে ছিল।
Re-upping the stunning demolition videos showcasing housing oversupply in China: 15 skyscrapers in China that were part of the Liyang Star City Phase II Project were just demolished after sitting unfinished for eight years due to absent market demand. pic.twitter.com/UByqjk8QXX
— Jon Hartley (@Jon_Hartley_) September 15, 2021
সত্যিই এমন কোনও ঘটনা ঘটেছিল কিনা সেই সম্পর্কে জানতে আমরা আরও কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ইউএসএ টুডে-র ইউটিউব চ্যানেলেও আমরা একই ধরনের ১৫টি বহুতল ধ্বংস হওয়ার একটি ভিডিয়ো খুঁজে পাই। যদিও এই ভিডিয়োটি অন্য ক্যামেরায় অন্য দিক থেকে ধারণ করা হয়েছিল।
এর পাশাপাশি আমরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনের সন্ধান পাই যা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশ পায়। সেই ভিডিয়োটিতেও উল্লেখ করা হয় যে চাহিদার তুলনায় বহুতলের সংখ্যা অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় কারণে ওই বিল্ডিংগুলি ধ্বংস করে ফেলা হয়। যার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর নেটিজেনরা কার্যত হতভম্ভ হয়ে যাচ্ছেন।
সুতরাং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে ভিডিয়োটি তুরস্কের নয়, বরং চিনের। এবং এর সঙ্গে হওয়া সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কোনও সম্পর্ক নেই।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে তুরস্কের ভূমিকম্পের দরুণ একের পর এক বহুতল ভেঙে পড়ছে।
ভাইরাল ভিডিয়োটি তুরস্কের নয়, বরং চিনের। ২০২১ সালে চিনে বিস্ফোরকের সাহায্যে ১৫টি বহুতল পর্যাপ্ত চাহিদার অভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছিল।