scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: ইরানের হামলায় ইজরায়েলিদের মৃতদেহ দাবিতে ছড়াল 'প্রতীকী' কফিনের ছবি

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটিতে ইরানের বিমান হানার পর মৃত ইজরায়েলি নাগরিক বা সেনাদের কফিন দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

গত ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বেরুটের দক্ষিণে দাহিয়া এলাকায় ইজরায়েলি বিমান হানায় নিহত হন হিজবুল্লা প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরুল্লার। আর নাসরুল্লার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে ইজরায়েলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইজরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে মোট ২০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে খবর। 

আর এই সার্বিক পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ইরান-ইজরায়েল সংঘাত সংক্রান্ত একটি ছবি। তাতে ইজরায়েলের পতাকায় মোড়া বেশ কয়েকটি কফিনকে সামনে রেখে বেশকিছু মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি শেয়ার করে ইঙ্গিত করা হচ্ছে, সেটি ইরানের বিমান হানায় মৃত ইজরায়েলি নাগরিক বা সেনাদের কফিন।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ এমন সকাল প্রতিদিন আসুক! ইরানের রকেট হামলায়।” এই একই ছবি শেয়ার করে অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ এমন সকাল প্রতিদিন আসুক। ১ অক্টোবর ২০২৪।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ছবিটিতে ইরানের বিমান হানায় মৃত ইজরায়েলি নাগরিকদের কফিন নয় বরং সেটিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর তেল আভিভে আয়োজিত ইজরায়েলি নাগরিকদের বিক্ষোভে ব্যবহৃত প্রতীকি কফিন দেখা যাচ্ছে।  

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল দাবি ও ছবিরর সত্যতা জানতে আমরা সেটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন আমরা ২০২৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ভাইরাল ছবিটির সঙ্গে সাদৃশ্য যুক্ত একটি ছবি-সহ ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যম The Jerusalem Post-এর অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে  একটি পোস্ট দেখতে পাই। ছবিটি শেয়ার করে সেখানে লেখা হয়েছে, “বৃহস্পতিবার বিকেলে তেল আভিভের হাবিমা স্কোয়ারে বিক্ষোভকারীরা।” নিচে ভাইারল ছবির সঙ্গে The Jerusalem Post-এ প্রাপ্ত ছবির তুলনা করা হল।

Advertisement

এরপর উক্ত সূত্র ধরে এই সংক্রান্ত একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করলে আমরা গত ৫ সেপ্টেম্বর ব্রিটেন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম Sky News-এর ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাই। সেই ভিডিও প্রতিবেদনের থামলেনের সঙ্গে আমরা ভাইরাল ছবির সাদৃশ্যতাও খুঁজে পাই। ভিডিওটি পোস্ট করে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজায় হামাসের হাতে নিহত হয়েছে ৬ জন ইজরায়েলি বন্দি। আর তাদের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইজরায়েল জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ। এরই অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার বিকেলে তেল আভিভে নিহত ইজরায়েলি বন্দিদের প্রতীকী কফিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দেশটির জনগণ। 

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী সার্চে আমরা গত ৬ সেপ্টেম্বর The Times of Israel-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। সেখানে আমরা এই বিক্ষোভের অন্য দিক থেকে তোলা একটি ছবি দেখতে পাই, যেটির সঙ্গে ভাইরাল ছবির সাদৃশ্যতাও রয়েছে। সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “গাজায় নিহত ইজরায়েলি বন্দিদের মৃত্যুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর তেল আভিভের আইওএফ সদর দফতরে ২৭টি প্রতীকী কফিন নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীরা হামাসের হাত থেকে বাকি বন্দিদের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে আলোচনায় বসার দাবি জানান।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে ইরানের বিমান হানায় মৃত ইজরায়েলি নাগরিকদের কফিন দৃশ্য দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে তেল আভিভের বিক্ষোভে ব্যবহৃত প্রতীকী কফিনের ছবি।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে ইরানের বিমান হানার পর মৃত ইজরায়েলি নাগরিক বা সেনাদের কফিন।

ফলাফল

ভাইরাল ছবিটিতে ইরানের বিমান হানায় মৃত ইজরায়েলি নাগরিকদের কফিন নয় বরং সেটিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর তেল আভিভে আয়োজিত ইজরায়েলি নাগরিকদের বিক্ষোভে ব্যবহৃত প্রতীকী কফিন দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement