scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: অ্যামাজনের জঙ্গলে নতুন বিস্ময় নয়, দীর্ঘতম ঘাড়-যুক্ত মানব ও কঙ্কালের ছবি AI নির্মিত

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি সম্পূর্ণ অসত্য। এখানে থাকা সবকটি ছবি-ই AI বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি। 

Advertisement

পৃথিবীর ফুসফুস বলে ডাকা হয় অ্যামাজনের রেইন ফরেস্ট বা জঙ্গলকে। সেই জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা বিস্ময়ের অন্ত নেই। তবে এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল কয়েকটি ছবির মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে যে সম্প্রতি নাকি অ্যামাজনের রেইন ফরেস্ট থেকে মানব সভ্যতার ইতিহাসে দীর্ঘতম ঘাড়-যুক্ত দৈত্যের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। 

এই পোস্টে সুদীর্ঘ হাড়-যুক্ত একটি কঙ্কালের ছবি দেখা যাচ্ছে যা বালির উপর পড়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে আরও দু'টো ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যার একটি ছবিতে দুই লম্বা ঘাড়-যুক্ত মানব দেখা যাচ্ছে। অপর একটি ছবিতে একসঙ্গে সাত জনকে দেখা যাচ্ছে যাদের মধ্যে কেবল দু'জনের ঘাড়ের উচ্চতা অস্বাভাবিক রকমের। 

এই ছবিগুলির একটি কোলাজ ফেসবুকে শেয়ার করে লেখা হয়েছে, "আমাজন রেইনফরেস্টে বিস্ময়কর আবিষ্কার! বিশ্বের দীর্ঘতম ঘাড় সহ দৈত্যের কঙ্কাল পাওয়া গেছে, এমন একটি প্রকাশ যা ইতিহাসকে বদলে দেয়। সেই সঙ্গে এই দাবির সপক্ষে একটি লিঙ্কও পোস্ট করা হয়েছে।" 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি সম্পূর্ণ অসত্য। এখানে থাকা সবকটি ছবি-ই AI বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি

যদি অ্যামাজনের রেইন ফরেস্টে সাম্প্রতিক সময়ে, বা কখনও এমন কোনও বিস্ময়কর আবিষ্কার ঘটনা ঘটে থাকতো, তবে নিশ্চিতভাবে সেই বিষয়ে দেশ-বিদেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমেও খবর ছাপা হতো। কিন্তু একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ সত্ত্বেও বিশ্বাসযোগ্য কোনও সংবাদ প্রতিষ্ঠানে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। 

গিনেস বুকের ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী, বিশ্বে দীর্ঘতম ঘাড় কোনও একক মানুষের নয়, বরং থ্যাইল্যান্ডের একটি জনজাতির মহিলাদের মধ্যে দেখা যায় যারা ঘাড়ে এক ধরনের রিং পরেন। 

Advertisement

ছবিগুলিতে দেখতে পাওয়া দীর্ঘ ঘাড় অস্বাভাবিক তো বটেই। সেই সঙ্গে একটি ছবি ভালো দেখলে সংশয় দৃঢ় হয়ে যায় যে এগুলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি হয়ে থাকতে পারে। যেমন, তৃতীয় ছবিতে যেখানে তিন শিশু-সহ মোট সাত ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, সেখানে এক ব্যক্তির শরীর দেখা গেলেও কোনও মাথা নেই। এর থেকেই কার্যত পরিষ্কার হয়ে যায় যে ছবিগুলি এআই নির্মিত। 

সবশেষে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আমরা হাইভ মডারেশনের মতো এআই ছবি যাচাইকারী ওয়েবসাইটে ছবিগুলি পরীক্ষা করি। তখন এই তিনটি ছবির ক্ষেত্রেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে এগুলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে তৈরি। কেননা হাইভ মডারেশনে দুটি ছবি ৯৯ শতাংশ এবং অপর ছবিটি ৮২ শতাংশ এআই নির্মিত বলে জানানো হয়। 

সেই সঙ্গে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য যে এই ছবিগুলি ব্যবহার করে কয়েকমাস আগেও একই ধরনের দাবি ভাইরাল হয়েছিল। তখন ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো শ্রীলঙ্কার তরফেও কয়েকটি ছবির সত্যতা যাচাই করা হয়। সেখানে উল্লেখ পায় যে এক টিকটিক ব্যবহারকারী এই ছবিগুলি এআই দিয়ে বানিয়েছিলেন। 

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে এআই দ্বারা তৈরি কতগুলি আজগুবি ছবি আসল ঘটনার দাবিতে বিভ্রান্তিকরভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

অ্যামাজনের রেইন ফরেস্টে বিস্ময়কর আবিষ্কার! বিশ্বের দীর্ঘতম ঘাড় সহ দৈত্যের কঙ্কাল পাওয়া গেছে।

ফলাফল

এমন কোনও আবিষ্কার হয়নি। এই ছবিগুলি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা তৈরি। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement