scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: আরজি কর কাণ্ডে মমতাকে 'দরাজ সার্টিফিকেট' দেননি অরিজিৎ, ছড়াচ্ছে ভুয়ো স্ক্রিনশট 

এই পোস্টটি শেয়ার করে তৃণমূল সমর্থকেরা লিখছেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে দরাজ শংসাপত্র দিলেন পৃথিবী বিখ্যাত গায়ক অরিজিৎ সিং। অথচ বিচিপি ও ছিঃ পি এম সোশ্যাল মিডিয়াতে মিথ্যা খবর প্রচার করছে।"

Advertisement

আরজি কর কাণ্ডে শিক্ষানবীশ চিকিৎসকের খুন-ধর্ষণের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় আচমকাই শিল্পী অরিজিৎ সিংহের ধর্ষণ নিয়ে করা একটি মন্তব্যের পুরনো ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটও বেশ ভাইরাল হচ্ছে। 

এই স্ক্রিনশটের খবরে অরিজিৎকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে যে তিনি নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন জানিয়ে ফেক নিউজের প্রচার বন্ধ করতে বলেছেন। আনন্দবাজারের লোগো-সহ প্রকাশিত এই স্ক্রিনশটের শিরোনামে লেখা হয়েছে, "আর জি করে মৃত ডাক্তারের বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরোধীরা আমার বক্তব্যের ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে: অরিজিৎ।"

শিরোনামের নীচের অংশে লেখা দেখা যাচ্ছে, "যে কোন মৃত্যুই খুবই দুঃখজনক। আর জি কর নিয়ে প্রতিবাদ হওয়া খুবই দরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী উনি খুবই ভালো মানুষ। মানুষের জন্য অনেক কাজ করে। মাননীয়া যেভাবে আর জি কর বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করছে আমার ভালো লেগেছে। আমি ওনার বিরুদ্ধে নয়।"

এই পোস্টটি শেয়ার করে তৃণমূল সমর্থকেরা লিখছেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে দরাজ শংসাপত্র দিলেন পৃথিবী বিখ্যাত গায়ক অরিজিৎ সিং। অথচ বিচিপি ও ছিঃ পি এম সোশ্যাল মিডিয়াতে মিথ্যা খবর প্রচার করছে।"

আজ তক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে আনন্দবাজার পত্রিকার পক্ষ থেকে এমন কোনও খবর প্রকাশ করা হয়নি। এই স্ক্রিনশটটি পুরোপুরি ভুয়ো। 

কীভাবে জানা গেল সত্য়ি

খবরের এই স্ক্রিশটের শিরোনামেই বাংলা বানান ভুল হওয়া থেকেই সংশয় হয় যে এই স্ক্রিনশট ভুয়ো হতে পারে। কারণ, এখানে ভুয়ো বানানটিকে অতিরিক্ত একটি চন্দ্রবিন্দু জুড়ে 'ভুয়োঁ' লেখা হয়েছে। এমন কোনও বাংলা বানানের অস্তিত্ব বাংলা অভিধানে নেই। 

Advertisement

দ্বিতীয়ত, শিরোনামের নীচে থাকা অংশেই আরেকটি বানান ভুল। লেখা হয়েছে, 'যে কোন।' তবে আসল বানানটি হল- "যে কোনও বা যে কোনো।" এর থেকেই আন্দাজ করা যায় যে এটি একটি বানোয়াট স্ক্রিনশট। কারণ আনন্দবাজারের মতো প্রতিষ্ঠানের শিরোনামে এই ধরনের দৃষ্টিকটু ভুল হয় না বললেই চলে। 

এ ছাড়াও অরিজিতের কোনও সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে আমরা দেখতে পাইনি তাঁকে এ ধরনের কোনও মন্তব্য করতে। 

কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখা যায় যে গত ২ অগস্ট অরিজিৎকে নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালে শেষবার খবর প্রকাশ করা হয়েছিল। নিজের অসুস্থতার কারণে তিনি অগস্টের সব শো বাতিল করেছিলেন, সেই খবর ছিল এই সংক্রান্ত। 

এই প্রতিবেদনের মোবাইল ভিউ স্ক্রিনশটের সঙ্গে ভাইরাল স্ক্রিনশটের তুলনা করলে পরিষ্কার হয়ে যায় যে কীভাবে নকল এবং ভুয়ো প্রতিবেদনের ছবি তৈরি করা হয়েছে। আসল প্রতিবেদনে আনন্দবাজার লেখাটি মাঝে নয়, বাঁ-দিক ঘেঁষে আসে। প্রতিবেদনের শুরুতে শিরোনাম থাকে, তাঁর নীচে স্বল্প বিবরণী। কিন্তু ভাইরাল পোস্টে প্রথমেই ছবি দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়াও প্রতিবেদন শুরুর আগে আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক, প্রতিবেদন প্রকাশের স্থান, সঙ্গে প্রতিবেদন প্রকাশ দিনক্ষণ ও তারিখ উল্লেখ করা থাকে। কিন্তু যে স্ক্রিনশট তৃণমূল সমর্থকেরা শেয়ার করছেন, সেখানে এসব কিছুই নেই। সব থেকে বড় কথা হল- আলাদা ফন্ট। আনন্দবাজার বাংলা লেখার জন্য যে ফন্ট ব্যবহার করে, তার সঙ্গে এই ফন্টের কোনও মিলই নেই। 

ফলে বুঝতে বাকি থাকে না যে একটি ভুয়ো প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। 

 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

মুখ্যমন্ত্রীকে দরাজ সার্টিফিকেট অরিজিৎ সিংয়ের। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি জানালেন যে তাঁর নামে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে এবং তাঁর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদ ভালো লেগেছে।

ফলাফল

অরিজিৎ সিং এমন কোনও মন্তব্য করেননি। আনন্দবাজার পত্রিকার স্ক্রিনশটটি পুরোপুরি ভুয়ো। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement