scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: 'CAA নাগরিকত্ব দেবে না!' এমন কোনও মন্তব্য করেননি হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, সিএএ কাউকে নাগরিকত্ব দেবে না।

Advertisement

লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আইনে পরিণত হওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছর পর কার্যকর করা হয়েছে সিএএ। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর এই আইন পাশ করেছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। গত ১১ মার্চ একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিএএ চালু করার কথা জানিয়ে দেয় কেন্দ্র। 

সিএএ জারি হওয়ার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই আইনের পক্ষে ও বিপক্ষে একাধিক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। এমনই কিছু ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয়েছে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, সিএএ কাউকে নাগরিকত্ব দেবে না।

সুপ্রিয় মণ্ডল নামক এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “উত্তাল অসম “CAA নাগরিত্ব দেবেনা”..বক্তা: অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তবিশ্বর্মা। পিঠ পালিশের ভয়ে বলে ফেললেন নাকি?” একই দাবি সহপোস্ট করেছেন বিশ্বজিৎ সাউ নামক অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী। (সব ক্যাপশন অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল পোস্টটি বিভ্রান্তিকর।

যেভাবে জানা গেল সত্য

যদি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এমন কোনও মন্তব্য করেন যে, সিএএ কাউকে নাগরিত্ব দেবে না। তাহলে অবশ্যই সেই সংক্রান্ত খবর নির্ভরযোগ্য সংবাদ মাধ্য়মগুলিতে প্রকাশিত হত। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের কিওয়ার্ড সার্চে কোনও নির্ভরযোগ্য সংবাদ প্রতিবেদন বা তথ্য় খুঁজে পাওয়া যায়নি। যা থেকে আন্দাজ করা যায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী খুব সম্ভবত এমন মন্তব্য করেননি।

তবে কিওয়ার্ড সার্চ করার সময় নিউজ-১৮ অসম/নর্থইস্ট-এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ মার্চ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার একটি সাংবাদিক সম্মেলন দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে তাঁকে সিএএ-র বিরোধিতায় অসমে হওয়া বিভিন্ন বিক্ষোভ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা গেছে। সেখানে তিনি বলেন, “সিএএ নিয়ে নতুন কিছু বলা হয়নি। আগেই এই আইন তৈরি হয়েছিল। যারা এর বিরোধিতা করছেন, তাদের দাবি সত্যি কি না, তা আগামী এক মাসের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। তখন সবাই জানতে পারবেন যে লক্ষ লক্ষ মানুষ নাগরিকত্বের আবেদন করেছেন নাকি কয়েক হাজার।”

Advertisement

 

সেই একই সাংবাদিক সম্মেলনে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “অসমে এনআরসি-তে বাদ যাওয়া মানুষ ছাড়া একজনও নাগরিকত্ব পাবেন না। আর যদি তার বাইরে নতুন কেউ নাগরিকত্ব পান তবে আমি সবার প্রথমে ইস্তফা দেব।” এই সাংবাদিক সম্মেলন সম্পর্কে আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন

অর্থাৎ, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে কেউ নাগরিকত্ব পাবেন না, এই মন্তব্য করেননি হিমন্ত। বরং, এই নিয়ে তাঁর করা একটি অন্য মন্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে। এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে কে বা কারা সিএএ’র মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাবেন আর কারা পাবেন না তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করে দেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। 

তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বিগত দিনে এনআরসিতে যেসব মানুষ অসমে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন, তাঁরাই কেবলমাত্র সিএএ’র মাধ্যমে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারত তথা অসমে আসা শরণার্থীদেরই কেবলমাত্র এই আইনের মাধ্যমে এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু তাদের অবশ্যই হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি অথবা খ্রিস্টান সম্প্রদায় ভুক্ত হতে হবে। অন্য কোনও সম্প্রদায়ের মানুষকে কিংবা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পরে আসা কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। 

ভাইরাল পোস্টগুলিতে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এই সাংবাদিক সম্মেলনে করা মন্তব্যের কিছু অংশ নিয়ে বিভ্রান্তিকরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এবং দাবি করা হয়েছে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, সিএএ কাউকে নাগরিকত্ব দেবে না। যা সত্যি নয়। 

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, সিএএ কাউকে নাগরিত্ব দেবে না।

ফলাফল

না, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এমন কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন, এনআরসি-র জেরে নাগরিকত্ব হারানো মানুষ ছাড়া বাকি কেউ সিএএ’র মাধ্যমে নতুন করে নাগরিকত্ব পাবেন না।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement