scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: ভারতীয় আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বৈঠক শেখ হাসিনার?

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবিতে এক ব্যক্তিকে মার্ক করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি একজন ভারতীয় আধিকারিক এবং হাসিনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করছেন।

Advertisement

সম্প্রতি কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। যার ফলে ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাহত হয়ে পড়ে আইন ব্যবস্থা। যে কারণে একের পর এক হিংসা ও মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য গত ২১ জুলাই শীর্ষ স্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আর এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে শেখ হাসিনার সেই বৈঠকের একটি ছবি। ছবিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কয়েকজন সেনা আধিকারিক-সহ অন্যান্যদের বৈঠক করতে দেখা যাচ্ছে। আর সেই ছবিতে একজনকে চিহ্নিত করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি একজন ভারতীয় আধিকারিক এবং হাসিনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করছেন। মূলত এই ছবিটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাদা দুটি দাবি ভাইরাল হয়েছে। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটির সঙ্গে ভারতের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাইদীর একটি ছবি শেয়ার করে তার উপরে লিখেছেন, “কোটার নামে ভারতীয়দের চাকরি দেয়া হচ্ছে, শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য।।” একই সঙ্গে তিনি ক্যাপশেনে লিখেছেন, “৭১ এ পাকিস্তানীদের হাত থেকে দেশ স্বাধীন করে কি লাভ হলো??” 

অপর ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটির সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “ভাবা যায়, একজন প্রধানমন্ত্রী তার দেশের তিন বাহিনীর প্রধানদের সাথে বৈঠক করছে সেই বৈঠকে ভারতের র এর কর্মকর্তাও রয়েছে।। আমাদের দেশটা আসলে কে চালায় শেখ হাসিনা নাকি ভারত??” (সব বানান অপরিবর্তিত।) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ছবিতে যে ব্যক্তিকে মার্ক করা হয়েছে তিনি কোনও ভারতীয় আধিকারিক নন। বরং তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী।

Advertisement

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল ছবি ও দাবির সত্যতা জানতে আমরা সেটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন আমরা গত ২১ জুলাই ভয়েস অব আমেরিকা বাংলায় এই একই ছবি-সহ একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার (২১ জুলাই ২০২৪) প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, মন্ত্রীপরিষদ সচিব ও সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপারে তাদের নির্দেশনা দেন।”

এরপর আমরা গত ২১ জুলাই বাংলাদেশের শাসকদল আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজেও ভাইরাল ছবি-সহ ওই বৈঠকের আরও একাধিক ছবি দেখতে পাই। সেখানেও ছবিগুলি লেখা হয়েছে, “বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (২১ জুলাই ২০২৪) প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করে দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেন।”

এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে এই সংক্রান্ত একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন আমরা ২০২৪ সালের ৫ মার্চ বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সাময়কালের ওয়েবসাইটে ভাইরাল ছবিতে মার্ক করা ব্যক্তির ছবি-সহ একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেই প্রতিবেদনে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরপর আমরা ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেল থেকেও এই একই তথ্য জানতে পরি। সেখানে ভাইরাল ছবিতে মার্ক করা ব্যক্তির সঙ্গে নিজের একটি ছবি পোস্ট করে রাজনাথ সিং লিখেছেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে ভালো বৈঠক হয়েছে।”

এর থেকে প্রমাণ হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকরত যে ব্যক্তিকে ভাইরাল ছবিতে মার্ক করা হয়েছে তিনি কোনও ভারতীয় আধিকারিক নন। বরং তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেক আহমেদ সিদ্দিক।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ছবির মার্ক করা ব্যক্তিটি একজন ভারতীয় আধিকারিক। যার সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ফলাফল

ভাইরাল ছবির ব্যক্তিটি কোনও ভারতীয় আধিকারিক নন। বরং তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement