দুটি কেন্দ্রের সাধারণ নির্বাচন ও ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ভবানীপুর কেন্দ্রের নির্বাচন নিয়ে এখন সাধারণ মানুষের কৌতূহল তুঙ্গে। এই কেন্দ্রের থেকে লড়াই করতে চলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই আবহে একটি দাবি সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, "পশ্চিম বঙ্গের সব কয়টি আসনে উপনির্বাচন একসাথে না হওয়ার কারণ আছে ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ভবানীপুরে হেরেও যান, তবুও তাকে আরেকটা সুযোগ দেওয়ার জন্য কয়েকটি আসনে পরে নির্বাচন হবে !"
পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পাবেন এখানে, এখানে ও এখানে।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর।
এখানে উল্লেখ্য, ভবানীপুর ছাড়াও, খড়দহ, গোসাবা, দিনহাটা ও শান্তিপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে।
বাকি কেন্দ্রের উপনির্বাচন না হওয়া মমতা কি বাড়তি সুবিধা পাবে?
এই কথা সত্যি যে ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী থেকে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু আরও চারটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন এখন হচ্ছে না বলে মমতা বন্দোপাধ্যায় এই নির্বাচন হেরে গেলে বাড়তি কোনও সুবিধা পাবেন না।
নিয়ম অনুযায়ী, এই নির্বাচন হেরে যাওয়া মানে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে তৃণমূল নেত্রীকে। আইন অনুযায়ী, যে কেউ মাত্র ছ'মাস অবধি বিধানসভার সদস্য না থেকেও মন্ত্রী থাকতে পারেন। নভেম্বরের শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং, ভবানীপুর কেন্দ্রে হেরে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইস্তফা দিতেই হবে।
বিশিষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুমন্ত মুখার্জি জানাচ্ছেন, "ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে গেলে বাকি চারটে কেন্দ্রের থেকে তিনি ফের দাঁড়াতেই পারেন। কিন্তু যদি সবক'টি কেন্দ্রের নির্বাচন এক সঙ্গে হতো তাহলে কোনও অসুবিধা হত না। সেক্ষত্রে, কোনও একজন তৃণমূল বিধায়ক মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জন্য পদত্যাগ করতেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রতিক্রিয়া
এই উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করার সময়ে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক গুরুত্বের কথা মাথা রেখেই ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুধু পশ্চিমবঙ্গে পাঁচটি আসনে নয়, গোটা দেশে মোট ৩১টি বিধানসভা ও তিনটি লোকসভা আসনে উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও আসনেই (একমাত্র ভবানীপুর বাদে) নির্বাচন অনুষ্টিত করা হচ্ছে না।
সুতরাং, এই ফেসবুক পোস্টের দাবি যে বিভ্রান্তিকর তা বলাইবাহুল্য।
পশ্চিম বঙ্গের সব কয়টি আসনে উপনির্বাচন একসাথে না হওয়ার কারণ আছে ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ভবানীপুরে হেরেও যান, তবুও তাকে আরেকটা সুযোগ দেওয়ার জন্য কয়েকটি আসনে পরে নির্বাচন হবে।
চারটি আসনে পরে উপনির্বাচন হচ্ছে বলে কোনও সুবিধা মমতা বন্দোপাধ্যায় পাবেন না। ভবানীপুরে হেরে গেলে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতেই হবে।