scorecardresearch
 

না, মোরারজি দেশাই, ত্রিভুবন নারায়ণ সিং বা শিবু সোরেন নির্বাচন হেরে মুখ্যমন্ত্রী হননি

নির্বাচনে পরাজিত মুখ্যমন্ত্রীদের বিভ্রান্তিকর তালিকা সোশ্যাল মিডিয়াতে

Advertisement
Election Election

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যিনি বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হলেন?

পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এই প্রশ্নটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

আশিস মন্ডল নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন যে মমতার আগে, ১৯৫২ সালে মোরারজি দেশাই, ১৯৭০ সালে ত্রিভুবন নারায়ণ সিং ২০০৯ সালে শিবু সোরেন নির্বাচনে হেরে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।

পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পাবেন এখানে

ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর।

তদন্তে নেমে আমরা প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট গিয়ে ১৯৫১ সালের তৎকালীন বম্বে নির্বাচনের ফলাফল ক্ষতিয়ে দেখি। দেখা যাচ্ছে, বুলসার চিক্কলি কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন মোরারজি দেশাই। ২৬শে মার্চ ১৯৫২ সালে সেই কেন্দ্রের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দেখা যাচ্ছে নির্বাচনের দু'নম্বরে শেষ করেও দেশাই কে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

Election

 

এর কারণ, সেই সময়ে ভারতের কিছু লোকসভা ও কিছু বিধানসভা কেন্দ্র দু-সদস্য বিশিষ্ঠ কেন্দ্র ছিল। অর্থাৎ, সেই কেন্দ্রগুলো থেকে দু'জন করে সাংসদ বা বিধায়ক নির্বাচিত হবে। তাই দু'নম্বরে শেষ করেও বিধায়ক হয়েছিলেন দেশাই। অবশেষে,১৯৬০ সালে এই ব্যবস্থা রোধ করতে একটি বিল পেশ করা হয় এবং ১৯৬১ সালে এই দু-সদস্য কেন্দ্রের ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়।

Bill

সুতরাং, দেশাই কিন্তু কাগজে-কলমে নির্বাচনে পরাজিত হননি।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে উত্তর প্রদেশের পঞ্চম বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে ত্রিভুবন নারায়ণ সিং প্রতিদ্বন্ধিতা করেননি। সেই নির্বাচন শেষে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন চন্দ্রভানু গুপ্তা

Advertisement

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে গুপ্তার পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন চৌধুরী চরণ সিং। এর পর রাষ্ট্রপতি শাসন শুরু হয়ে যায়। ১৭ দিনের রাষ্ট্রপতি শাসন শেষ হলে, ১৯৭০ সালের ১৮ই অক্টোবর সংযুক্ত বিধায়ক দলের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ত্রিভুবন নারায়ণ সিং।  কিন্তু ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে তিনি গোরক্ষপুর জেলার মনিরাম আসনের উপনির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে আর মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারেননি।

TN Singh

অর্থাৎ, নির্বাচন হেরে মুখ্যমন্ত্রী হননি ত্রিভুবন নারায়ণ সিং।

পরিশেষে, আমরা ২০০৯ সালের ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ক্ষতিয়ে দেখি। দেখা যাচ্ছে, সেই বছর শিবু সোরেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।

নির্বাচন শেষে, সাংসদ থাকাকালীনই ২০০৯ সালের ৩০শে ডিসেম্বর তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন বাদেই শরিক এনডিএ-এর সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি হওয়ায় তিনি পদত্যাগ করে বিজেপিকে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেন।

সুতরাং, বলা যেতেই পারে যে এই ফেসবুক পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর। মোরাজি দেশাই, ত্রিভুবন নারায়ণ সিং এবং শিবু সোরেন কেউই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নির্বাচন হেরে মুখ্যমন্ত্রী হননি।

ফ্যাক্ট চেক

A facebook user

দাবি

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে, ১৯৫২ সালে মোরাজি দেশাই, ১৯৭০ সালে ত্রিভুবন নারায়ণ সিং ও ২০০৯ সালে শিবু সোরেন নির্বাচনে হেরে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।

ফলাফল

ত্রিভুবন সিং বা শিবু সোরেন যখন মুখ্যমন্ত্রী হন তখন তাঁরা বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হননি। অন্যদিকে, ১৯৫২ সালে বুলসার চিক্কলি কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন মোরারজি দেশাই।দু'নম্বরে শেষ করেও দেশাই বিধায়ক হয়েছিলেন। কারণ, এই কেন্দ্রটি সেই সময়ে দু-সদস্য কেন্দ্র ছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
A facebook user
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement