scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে মা কালীর মন্দির চত্বরে পাথরবাজির ঘটনায় নেই কোনও সাম্প্রদায়িক যোগ

আজতক ফ্যাক্ট চেকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে পুলিশ তদন্ত করে এই ঘটনায় যে কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক রং নেই বলেই জানিয়েছে। 

Advertisement

সম্প্রতি দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় একটি মা কালীর মন্দির চত্ত্বরে পাথর ছোড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোর পড়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত একটি সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিওতে বেশ কিছু যুবককে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা একটি এলাকায় ব্যস্ত হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যাচ্ছে। 

ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে এমন ইঙ্গিত করা হচ্ছে যে, জাহাঙ্গীরপুরীর মা কালি মন্দিরে মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে পাথর ছোড়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সরাসরি মুসলমান সম্প্রদায়কে দায়ী না করে 'শান্তিরক্ষী' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যে শব্দ সাধারণত মুসলিম সম্প্রদায়কে নিশানা করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "দিল্লিতে কালী মাতার মন্দিরে জাহাঙ্গীর। শান্তিরক্ষীরা পাথর ছুড়েছে শিশুদের মধ্যে মারামারি হয়েছে বলে তথ্য আসছে। পারস্পরিক বিবাদে কেন আমাদের মন্দিরে পাথর ছোড়া হল? যতক্ষণ না শান্তিরক্ষীদের চিকিৎসা করা হবে পুলিশ, ততক্ষণ পর্যন্ত মন্তব্য এবং রিপোস্ট বন্ধ করা উচিত নয়।" 

এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও ট্যাগ করে জানতে চাওয়া হয়েছে যে দোষীদের কবে শায়েস্তা করা হবে। 

আজতক ফ্যাক্ট চেকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে পুলিশ তদন্ত করে এই ঘটনায় যে কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক রং নেই বলেই জানিয়েছে। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি

সবার প্রথম এই ঘটনা সম্পর্কে কিওয়ার্ড সার্চের সাহায্যে আমরা কিছু তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা করি। তখন সবার প্রথম ৬ নভেম্বর প্রকাশিত দ্য হিন্দুর একটি খবর আমাদের নজরে পড়ে। খবরে বলা হয় যে পুলিশ এই ঘটনায় কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণের বিষয়টি পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটে সোমবার, বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ। 

Advertisement

এ ছাড়াও আমরা জাগরণের একটি খবর খুঁজে পাই। যেখানে দিল্লির উত্তর-পশ্চিমের ডিসিপি অভিষেক ধানিয়াকে উদ্ধৃত করে বলা হয় যে, এই ঘটনায় একই সম্প্রদায়ের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পাথরবাজির ঘটনা ঘটেছিল। যারা এই ধরনের গুজব সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে পুলিশ তাদের চিহ্নিত করা শুরু করে দিয়েছে। পাশাপাশি যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিল পুলিশ তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে। 

খবর অনুযায়ী, অভিষেক ধানিয়া জানান যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে যে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিল তারা সকলেই নাবালক। ঠিক সেই কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি। এই প্রতিবেদনেও তাদের নাম একই কারণে প্রকাশ করা হচ্ছে না। রাত ৮টা ১৫ নাগাদ এই ঘটনার খবর পাওয়ার পরই মহেন্দ্র থানা পার্কের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। 

এই বিষয়ে বিশদে জানতে চেয়ে আমরা ডিসিপি অভিষেক ধানিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকেই এমন একটি দাবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করছে যে জিহাদিদের দ্বারা মন্দিরে পাথর ছোড়া হয়েছে। কিন্তু এই দাবির নেপথ্যে কোনও সত্যতা নেই। একই সম্প্রদায়ের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলে আসা বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। ডিসিপি ধানিয়া আরও জানান যে এই ঘটনায় দুই যুবক আহত হয়েছিল যাদের হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পাথর ছোড়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি এফআইআর রুজু করা হয়েছে। 

পাশাপাশি এই বিষয়ে ডিসিপি অভিষেক ধানিয়া একটি ভিডিও বার্তাও জারি করেন। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে যে অভিযুক্ত দুই নাবালকের বিরুদ্ধে আগেও এফআইআর দায়ের হয়েছিল। এই ঘটনায় জড়িত সকল নাবালকের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় যারা লিখছেন যে জিহাদির দ্বারা মন্দিরে হামলা করা হয়েছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। 

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে একই সম্প্রদায়ের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলার কারণে পাথর ছোড়ার ঘটনাকে মুসলিমদের দ্বারা মন্দিরে আক্রমণের মোড়কে ভাইরাল করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় কালী মন্দিরে পাথর ছুড়ছে মুসলিমরা। 

ফলাফল

পুলিশ তদন্ত করে জানিয়েছে যে এই ঘটনায় কোনও সাম্প্রদায়িক যোগ নেই। একই সম্প্রদায়ের নাবালকের দুটি গোষ্ঠী পুরনো শত্রুতার জেরে নিজেদের মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি করছিল।  

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement