scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত মহম্মদ আরিফের নামে সংবাদমাধ্যমে ছড়াল অন্য যুবকের ছবি

ইন্ডিয়া টুডে তদন্ত করে দেখেছে যে, গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ আরিফের নাম করে যে যুবকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে ছড়াচ্ছে, সেটা আসল ছবি নয়। ওই যুবকের নামও মহম্মদ আরিফ এবং তিনিও যাদবপুরেরই পড়ুয়া, তবে তিনি গ্রেফতার হননি।

Advertisement
যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত মহম্মদ আরিফের নামে সংবাদমাধ্যম ছড়াল অন্য যুবকের ছবি যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত মহম্মদ আরিফের নামে সংবাদমাধ্যম ছড়াল অন্য যুবকের ছবি

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যু ঘিরে ক্রমশ ঘণীভূত হচ্ছে রহস্য। এই ঘটনায় প্রথমে সৌরভ-দীপশেখর-মনোতোষ নামের তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারপর আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মোট গ্রেফতারি ৯। নয়া অভিযুক্তরা হল মহম্মদ আরিফ, মহম্মদ আশিফ আফজল আনসারি, অঙ্কন সরকার, অসিত সর্দার, সুমন নস্কর ও সপ্তক ক্যামিলা। পুলিশ সূত্রে খবর, এদের মধ্যে মহম্মদ আরিফ হল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, কাশ্মীরের বাসিন্দা। 

আর এই মহম্মদ আরিফের ছবি ঘিরেই সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে তার ছবি প্রকাশিত হয়েছে যেখানে, অ্যাশ কালারের টি-শার্ট, লাল শার্ট এবং ব্লু জিন্স পরা এক যুবকে গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ আরিফ বলে দাবি করা হয়েছে। জি ২৪ ঘণ্টার ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে। খবরটির আর্কাইভ ভার্সান দেখা যাবে এখানে।

এছাড়া নিউজ18 বাংলার প্রতিবেদনেও একই দাবি করা হয়েছে।

এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু পোস্ট কার্ড ভাইরাল হচ্ছে, সেখানেও এই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে। যা দেখা যাবে এখানে ও এখানে

যদিও ইন্ডিয়া টুডে তদন্ত করে দেখেছে যে, গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ আরিফের নাম করে যে যুবকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে ছড়াচ্ছে, সেটা আসল ছবি নয়। ওই যুবকের নামও মহম্মদ আরিফ এবং তিনিও যাদবপুরেরই পড়ুয়া, তবে তিনি গ্রেফতার হননি।

কীভাবে এগলো অনুসন্ধান?

ভাইরাল ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ফেসবুকে মহম্মদ আরিফ নামের একটি প্রোফাইলে আমরা ছবিটি খুঁজে পাই। ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল সেটা পোস্ট করা হয়েছিল।

Advertisement

১৬ অগাস্ট ওই প্রোফাইলে করা একটা পোস্ট আমাদের নজরে আসে। যেখানে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের স্ক্রিনশট পোস্ট করে মহম্মদ আরিফ দাবি করেন যে তিনি সেই ব্যক্তি নন, যাকে যাদবপুর কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি লেখেন, "আমি মহম্মদ আরিফ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি সায়েন্স বিভাগের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। কিছুক্ষন আগেই দেখি আমার ফোনে অনেকের কল এবং মেসেজ। যেখানে আমার ছবি ভাইরাল হয়েছে #Zee24Ghanta-তে। স্পষ্ট ভাবেই যে মোহাম্মদ আরিফ গ্রেফতার হয়েছে সে হলো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, বাড়ি কাশ্মীরে।"

এরপর ইন্ডিয়া টুডের তরফে সরাসরি মহমম্দ আরিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি আমাদের জানান যে, তাঁর ছবি ভুয়ো দাবি-সহ সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি যাদবপুরের এনার্জি সায়েন্স বিভাগের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং বাড়ি মালদহ। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, বাড়ি কাশ্মীরে। এই ধরনের ভুলের জন্য তিনি এবং তাঁর পরিবার যথেষ্ট অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। ভাইরাল পোস্ট কার্ডে 'কমরেড' বলে দাবি করা হলেও, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন বলে জানান মহম্মদ আরিফ 

যদিও পরে দেখা যায় জি ২৪ ঘণ্টার ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের ছবিটি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। এবং চ্যানেল কর্তৃপক্ষের তরফে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেওয়া হয়েছে। 

এরপর সূত্র মারফৎ আমরা গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ আরিফের ছবিটি পাই। এবং পুলিশের তরফে আমাদের নিশ্চিত করে জানান হয় যে, সেটাই গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ আরিফের ছবি।

সুতরাং সমস্ত তথ্য-প্রমাণ দেখে এটা বোঝাই যাচ্ছে নাম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক হওয়ায় অন্য মহম্মদ আরিফের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

ইনপুট- রাজেশ সাহা, ইন্ডিয়া টুডে

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

অ্যাশ কালারের টি-শার্ট, লাল শার্ট এবং ব্লু জিন্স পরা যুবকটি হল মহম্মদ আরিফ যাকে যাদবপুরকাণ্ডে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফলাফল

গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ আরিফের নাম করে যে যুবকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে ছড়াচ্ছে, সেটা আসল ছবি নয়। ওই যুবকের নামও মহম্মদ আরিফ এবং তিনিও যাদবপুরেরই পড়ুয়া, তবে তিনি গ্রেফতার হননি। নাম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক হওয়ায় অন্য মহম্মদ আরিফের ছবি ভাইরাল হয়েছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement