scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: ২০১০ সালে বেজিং-তিব্বতের রাস্তায় হওয়া পৃথিবীর অন্যতম বড় ট্রাফিক জ্যামের দৃশ্য এটি নয়

এটি নাকি পৃথিবীর অন্যতম বড় ট্রাফিক জ্যাম যা ২০১০ সালের অগস্ট মাসে চিনের বেজিং-তিব্বত এক্সপ্রেসওয়েতে দেখা গিয়েছিল!

Advertisement
 ভাইরাল পোস্টের ছবি-সহ যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর। ভাইরাল পোস্টের ছবি-সহ যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর।

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্টকার্ড বেশ ভাইরাল হয়েছে যেখানে দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যামের একটি ছবি দেওয়া রয়েছে। পোস্টকার্ডে এই ছবিটি দিয়ে একটি ফেসবুক পেজ থেকে দাবি করা হয়েছে যে এটি নাকি পৃথিবীর অন্যতম বড় ট্রাফিক জ্যাম যা ২০১০ সালের অগস্ট মাসে চিনের বেজিং-তিব্বত এক্সপ্রেসওয়েতে দেখা গিয়েছিল।

ভাইরাল সেই পোস্টকার্ডে লেখা হয়েছে, "১০ মিনিট ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকলেই বিরক্ত হয়ে যান? জানেন কি, পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বড় ট্যাফিক জ্যামটি হয়েছিল ২০১০ সালের আগস্ট মাসে চিনের বেজিং-তিব্বত এক্সপ্রেসওয়েতে। ১০০ কিলোমিটার লম্বা এই জ্যামে লাইন দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। প্রায় ১০ দিন লেগেছিলো রাস্তা ফাঁকা হতে। মূলত, রাস্তা তৈরী ও দুই ধারে লাইন দিয়ে লরি দাঁড়িয়ে থাকার কারণেই এই বিশাল ট্রাফিক জ্যামের তৈরী হয়েছিল।"

ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, এই পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। প্রথমত, ভাইরাল ছবিটি বেজিং-তিব্বত এক্সপ্রেসওয়েতে হওয়া জ্য়ামের ছবি নয়। দ্বিতীয়ত, বেজিং-তিব্বত এক্সপ্রেসওয়ের জ্যামটিও পৃথিবীর সবথেকে বড় নয়। 

আফয়া অনুসন্ধান

সবার প্রথম আমরা ভাইরাল ছবিটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখি। তখন এই একই ছবি আমরা ফোর্বসের একটি প্রতিবেদনে দেখতে পাই যা ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখতে পাই। ছবিতে লেখা ছিল, এটি বেজিং-হংকং-ম্যাকাও-র এক্সপ্রেসওয়েতে হওয়া একটি জ্যাম। 

সেই অনুযায়ী কীওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা ওই একই ছবিটি খুঁজে পাই স্টক ফটো ওয়েবসাইট অ্যালামিতে। সেখানে লেখা ছিল, এই ছবিটি ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবর তোলা হয়েছিল। যদিও কোথাও এমন তথ্য লেখা হয়নি যে এটি পৃথিবীর অন্যতম বড় ট্রাফিক জ্যাম। তবে ফোর্বসের প্রতিবেদনে ২০১০ সালের জ্যামটিকে চিনের দীর্ঘতম বলে উল্লেখ করা হয়।

Advertisement

এরপর আমরা পোস্টকার্ডে থাকা তথ্য অনুসারে বেজিং-তিব্বত এক্সপ্রেসওয়ের জ্যামের বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন বিবিসি-র একটি প্রতিবেদন আমরা পাই যা ২০১০ সালের ২৪ আগস্ট প্রকাশ পেয়েছিল। সেখান থেকে আমরা জানতে পারি, সত্যিই এই জ্যামটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ হয়েছিল। প্রায় ১২ দিন যাবত এই জ্যাম চলে। 

এই ঘটনার বিষয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে লেখা, জ্যামটি ২০১০ সালের ১৪ অগস্ট থেকে শুরু হয়েছিল। যদিও এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য আমরা খুঁজে পাইনি যেখানে একে পৃথিবীর অন্যতম বড় জ্যাম বলে উল্লেখ করা হয়। 

শেষে আমরা খুঁজে দেখি পৃথিবীর দীর্ঘতম ট্রাফিক জ্যাম কোথায় হয়? এই বিষয়ে কিওয়ার্ডের সাহায্যে খোঁজার পর আমরা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের টুইটার হ্যান্ডেলে একটি টুইট দেখতে পাই। সেই টুইটে লেখা হয়, পৃথিবীর দীর্ঘতম ট্রাফিক জ্যাম ফ্রান্সের লিঁওন শহর থেকে প্যারিস যাওয়ার রাস্তায় ১৯৮০ সালে হয়েছিল। 

টুইটের তথ্য অনুযায়ী, এই ট্রাফিক জ্যামটি ১৯৮০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হয়েছিল এবং দীর্ঘ ১৭৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। 

অর্থাৎ, সবমিলিয়ে ভাইরাল পোস্টের ছবি-সহ যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা যে বিভ্রান্তিকর সে কথা বলাই যায়। 

 

ফ্যাক্ট চেক

facebook page

দাবি

ছবিটি ২০১০ সালে বেজিং-তিব্বতের রাস্তায় হওয়া পৃথিবীর অন্যতম বড় ট্রাফিক জ্যামের দৃশ্য।

ফলাফল

এই ছবিটি আসলে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে বেজিং-হংকং-ম্যাকাও-র এক্সপ্রেসওয়েতে হওয়া একটি জ্যামের ছবি। ২০১০ সালে বেজিং-তিব্বতের রাস্তায় একটি দীর্ঘ জ্য়াম হয়েছিল। তবে পৃথিবীর দীর্ঘতম জ্যাম ১৯৮০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সে হয়েছিল এবং দীর্ঘ ১৭৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook page
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement