আরকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘটনা নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে নাগরিক সমাজের পাশাপাশি শিল্পী ও সেলেব সমাজও পথে নেমে এসেছে। সেই প্রতিবাদী মুখগুলির মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। যিনি প্রথম থেকে প্রতিবাদের প্রথম সারিতে রয়েছে।
এবার তাঁর একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সোহিনী কোনও একটি কাপড়ের দোকান থেকে বেরিয়ে আসছেন। এই ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, আরজি করে তিলোত্তমার মর্মান্তিকর মৃত্যুর পর শোক পালন ও প্রতিবাদ করলেও অন্যদিকে চুপিচুপি উৎসবে ফেরার মেজাজে পুজোর কেনাকাটা করছেন।
ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "তিলোত্তমার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর শোকাহত সোহিনী এইদেশে মা না হতে পারলেও উৎসবে চুপিচুপি ফিরছেন ! তার কিছু মূহুর্ত ধরা পড়লো তার পুজোর কেনাকাটার ধুম দেখে ! হয়তো এইজন্য কবি গেয়েছেন- কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায় !"
ভিডিওটির উপর লেখা হয়েছে, "চুপি চুপি পূজোর শপিংটা ঠিক সেরে নিচ্ছে। সন্ধ্যাবেলায় গড়িয়াহাঠে শাড়ি কিনতে সোহিনী।" (সকল বানান অপরিবর্তিত)
একই দাবিতে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলেও ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।
গভীর শোকাহত @sohinisarkar01 দি আজ শাড়ি গয়নার দোকানে গিয়ে পুজোর মধ্যে দোকান বন্ধ রাখার বার্তা দিয়ে এলেন। pic.twitter.com/xFdZ4qrsPO
— Pintu Kumar Mandal (@AITC__PINTU) September 11, 2024
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের পর প্রতিবাদে শামিল হয়ে সোহিনীকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে তিনি এই দেশে মা হতে চান না। এখানে সেই প্রসঙ্গ টেনেই ক্যাপশন লেখা হয়েছে।
আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে আলোচ্য ভিডিওটি প্রায় তিন মাস আগেকার। আরজি কর কাণ্ড ঘটনার প্রায় দু'মাস আগের।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
সবার প্রথম ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে আমরা তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সেই স্ক্রিনশটের রিভার্স সার্চ করতেই আমরা ওই ভিডিওটি দেখতে পাই টলিউড অনলাইনের ফেসবুক পেজে। ওই পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল চলতি বছর ১৫ জুন।
১৬ জুন এই ভিডিওটি পোস্ট করে সেই পেজে ক্যাপশনে লেখা হয়, সন্ধ্যাবেলায় গড়িয়াহাটে শাড়ি কিনতে সোহিনী। এই পোস্ট থেকেই কার্যত গোটা বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে এর সঙ্গে আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে রাখা তাঁর বক্তব্য, বা মন্তব্যের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, আজকি কর কাণ্ড ঘটনার দু'মাস আগের ভিডিও এটি।
আরজি করে নারকীয় খুন ও ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে ৯ অগস্ট। সেদিন সকালেই হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হলের একপাশে উদ্ধার হয় নির্যাতিতার দেহ। আনন্দবাজার পত্রিকার এই খবরে প্রাথমিক ঘটনার বিশদ তথ্য জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, আন্দোলন চলাকালীন দিনকয়েক আগেই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাক-যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন সোহিনী। বিনা চিকিৎসায় কোন্ননগরের এক যুবকের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে কল্যাণ এই নিয়ে শিল্পীদের নীরবতার বিষয়ে প্রশ্ন করেন। পাল্টা সোহিনী বলেন, রাজনৈতিক পতাকা ছেড়ে তিনিও এসে মিছিলে পা মেলাতে পারেন।
বোঝাই যাচ্ছে, অভিনেত্রীর অপ্রাসঙ্গিক ও পুরনো একটি ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আরজি কর নিয়ে চলা প্রতিবাদের মধ্যে অভিনেত্রী সোহিনী সরকার চুপিচুপি শপিং করছেন।
ভাইরাল ভিডিওটি চলতি বছর ১৫ জুন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে। আরজি কর কাণ্ড ঘটনার অন্তত দু'মাস আগেকার ঘটনা এটি।