scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: ত্রিপুরায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত বহু? না, ঘটনাটি বাংলাদেশের

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ত্রিপুরার আমবাসায় রথযাত্রায় বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪০-৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

অসতর্কতার কারণে হোক কিংবা কোনও দুর্ঘটনার জেরে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। তবে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের একবার এই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হওয়া সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো বেশ ভাইরাল হয়েছে। 

ভাইরাল ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, বেশকিছু মানুষ রাস্তার উপরে পড়ে আছেন এবং তাদের শরীর দিয়ে ধোঁয়া উড়ছে। অন্যদিকে কিছু মানুষ তাঁদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। ভিডিয়োটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ত্রিপুরার আমবাসায় একটি রথ বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে আসায় মৃত্যু হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ জনের।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিয়োটি শেয়ার করে লিখেছেন, “কয়েকদিন আগে উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের পর এবার ত্রিপুরার আমবাসায় রথে কারেন্ট লেগে অন্তত ৪০-৫০ জন মারা গেছেন। আর দুই রাজ্যেই ডবল ইঞ্জিন সরকার আর তারা চুপ।” (ক্যাপশনের বানান অপরিবর্তিত।) এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, রথযাত্রার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হওয়ার ঘটনাটি ত্রিপুরার নয়। বরং সেটি বাংলাদেশের বগুড়ার এবং এই ঘটনায় ৪০-৫০ জনের নয় মাত্র ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

গত ৭ জুলাই রথের দিন ত্রিপুরার আমবাসায় এহেন কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা তা জানতে আমরা একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। কিন্তু সেই সার্চে আমরা এমন কোনও তথ্য পাইনি যা থেকে ভাইরাল ভিডিয়োর দাবির সত্যতা প্রমাণ হয়। এরপর আমরা ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে একাধিক স্ক্রিনশট নিয়ে সেগুলির রিভার্স ইমেজ সার্চ করি।

তখন আমরা গত ৭ জুলাই বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম বাংলা নিউজ ২৪-এ একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে ভাইরাল ভিডিয়োর ফ্রেমের সঙ্গে হুবহু মিল থাকা একটি ছবি-সহ লেখা হয়েছে, গত ৭ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টার সময় বগুড়ার সদর উপজেলায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৫ জন মারা গেছেন। এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন। মৃতদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ ও একজন মহিলা।

Advertisement

এই একই তথ্য দেখতে পাই গত ৮ জুলাই অপর এক বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনেও। সেখানে লেখা হয়েছে, বগুড়া শহরের স্টেশন সড়কের সেউজগাড়ি এলাকায় রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৩ জন। এই রথযাত্রা বের হয়েছিল শহরের সেউজগাড়ি পালপাড়া এলাকা থেকে। আয়োজকের দায়িত্বে ছিল সেউজগাড়ি পালপাড়া আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন মন্দির)।

এরপর উপরে পাওয়া তথ্যের উপরে ভিত্তি করে আমরা পুনরায় কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন আমরা গত ৮ জুলাই বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভির অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ভাইরাল ভিডিয়োটি-সহ একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বগুড়ায় রথযাত্রায় বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচ পূণ্যার্থী মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়েছে। আহত ৩৩ পূণ্যার্থী শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুজনকে আনা হয়েছে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, ত্রিপুরার আমবাসায় রথযাত্রায় বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার দাবিটি মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিয়োটি আসলে বাংলাদেশের বগুড়ার।

তবে এখানে উল্লেখ্য, গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২৮ জুন ত্রিপুরার কুমারঘাটে উল্টোরথে তড়িতাহত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত খবরও প্রকাশিত হয়েছিল। তবে সেই ঘটনার সঙ্গে ভাইরাল ভিডিয়োর কোনও সম্পর্ক নেই।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরার আমবাসায় রথযাত্রার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪০-৫০ জনের মৃত্যু।

ফলাফল

ত্রিপুরার আমবাসায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা দাবিতে ভাইরাল বাংলাদেশের বগুড়ার ভিডিয়ো। এবং এই ঘটনায় ৪০-৫০ জনের নয় মাত্র ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement