যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যু! অভিযোগ ব়্যাগিংয়ের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে দশেরও বেশি জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নড়চড়ে বসেছে প্রশাসন থেকে সমাজের বিভিন্ন অংশ।
এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে একটি পোস্ট কার্ড। যেখানে এবিপি আনন্দ সম্প্রচারিত একটি খবরের অংশ বিশেষের স্ক্রিনশট রয়েছে। সেই স্ক্রিনশটে লেখা রয়েছে, "অত্যাচারের বিস্ফোরক অভিযোগ। নাম জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতার!" খবরের এই স্ক্রিনশটটির সঙ্গে পোস্টকার্ডে আরও লেখা হয়েছে, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্র খুনে জড়িত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ,প্রমাণ পেল পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী কি এই জন্যই আগে ভাগে SFI ও CPIM এর ঘাড়ে দোষ দিতে ঊনার স্বভাবনুযায়ী মিথ্যাচার শুরু করেছিলেন" (পোস্টের বানান অপরিবর্তিত)
এই পোস্টকার্ড আরও অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। যা দেখা যাবে এখানে, এখানে ও এখানে।
যদিও ইন্ডিয়া টুডে তদন্ত করে দেখেছে যে ভাইরাল পোস্টকার্ডে লেখা দাবিটি সত্যি নয়। যাদবপুর কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ অর্থাৎ শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের কোনও যোগ পায়নি পুলিশ।
কীভাবে এগলো অনুসন্ধান?
ভাইরাল পোস্ট কার্ডে এবিপি আনন্দের যে খবরের স্ক্রিনশটটি রয়েছে আমরা প্রথমে সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। এবিপি আনন্দের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে সেটা আমরা দেখতে পাই ১৯ অগাস্ট আপলোড করা হয়েছে। খবরটি আসলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের এক সদ্য প্রাক্তন পড়ুয়াকে হেনস্থা সংক্রান্ত। ওই পড়ুয়ার অভিযোগ ছিল হোস্টেলে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। সেই ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। এবিপি আনন্দে প্রচারিত খবরটির ৪৯ সেকেন্ডে ভাইরাল পোস্টাকার্ডে ব্যবহার করা স্ক্রিনশটটি খুঁজে পাওয়া যায়।
যাদবপুরকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। সরাসরি বাম, অতিবামদের নিশানা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, পুলিশের তরফে এখনও তাদের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ভাইরাল পোস্টকার্ডটির সত্যতা যাচাই করতে ইন্ডিয়া টুডের তরফে সরাসরি যোগাযোগ করা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের সঙ্গে। কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ এক অফইসার পোস্টকার্ডের দাবিটিকে ফেক বা ভুয়ো বলে চিহ্নিত করেছেন।
ফলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, যাদবপুরকাণ্ডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জড়িত থাকার দাবিতে ভাইরাল হওয়া পোস্টকার্ডটি আসলে ভুয়ো। ভাইরাল পোস্টকার্ডে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটা একটি ঘটনার খবরের স্ক্রিনশট যাদবপুরের সঙ্গে জুড়ে ব্যবহার করা হয়েছে।
*আজতক বা ইন্ডিয়া টুডে কোনও ধরনের হেনস্থা বা ব়্যাগিয়ের ঘটনাকেই সমর্থন করে না। এই ধরনের যেকোনও ঘটনাই নিন্দনীয়।*
ইনপুট: রাজেশ সাহা, ইন্ডিয়া টুডে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্র খুনে জড়িত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ,প্রমাণ পেল পুলিশ।
ভাইরাল পোস্টকার্ডে লেখা দাবিটি সত্যি নয়। যাদবপুর কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ অর্থাৎ শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের কোনও যোগ পায়নি পুলিশ।