scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: 'মানুষ তো রোজই মরে' মন্তব্যকারী এই প্রতিবাদী কোনও চিকিৎসক নন

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই মন্তব্যকারী তরুণী কোনও চিকিৎসক নন, বরং অন্য পেশার ব্যক্তি। তিনি আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে স্বাস্থ্যভবন অভিযানের দিন সেখানে গিয়েছিলেন।

Advertisement

আরজি করে ঘটা নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে ৫ দফা দাবি নিয়ে সল্টলেকে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া অবস্থান বিক্ষোভ শনিবার পঞ্চম দিনে পড়েছে। এ দিন দুপুরে ধর্নামঞ্চে এসে আন্দোলন সমাপ্ত করে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর এই আন্দোলনকে ঘিরে নানা ভিডিও ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

যেমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে যে, এক আন্দোলনকারী ডাক্তার সংবাদ মাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, "মানুষ তো রোজই মরে।" ভিডিওতে এক তরুনীকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে সুপ্রিম কোর্ট যে শুনানি করেছে তা একপেশে। এবং একসময় তাঁকে বলতে শোনা যায়, "এটাও বিচার্য বিষয় যে রোজ কত মানুষ মারা যায়।"

ভিডিওটি পোস্ট করে এই তরুণীকে আন্দোলনকারী চিকিৎসক বলে দাবি করা হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে একজন লিখেছেন, "মানুষ তো রোজই মরে, কি সুন্দর কথা। নমস্কার ডাক্তারবাবু। আমরা জানতাম আপনারা প্রাণ বাচান। ভুল জানতাম।#shameondoctor। আপনারা মানুষ মারার কল।"

এই একই ভিডিও পোস্ট করে অন্য একজনকে লিখতে দেখা যাচ্ছে, "কি সাংঘাতিক কথা বার্তা। মানুষ তো রোজই মরে, কি সুন্দর কথা। নমস্কার ডাক্তারবাবু আপনাকে, আমরা জানতাম প্রাণ বাচান, ভুল জানতাম।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই মন্তব্যকারী তরুণী কোনও চিকিৎসক নন, বরং অন্য পেশার ব্যক্তি। তিনি আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে স্বাস্থ্যভবন অভিযানের দিন সেখানে গিয়েছিলেন।

কীভাবে জানা গেল সত্যি

ভাইরাল ভিডিওতে এবিপি আনন্দের মাইকে সাক্ষাৎকার নিতে দেখা যাচ্ছিল। কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা এবিপি আনন্দে সম্প্রচারিত লাইভ ভিডিও থেকে ওই অংশটি খুঁজে পাই যেখানে এবিপি আনন্দর সাংবাদিক সন্দীপ সরকার ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। ঠিক ১০:২১:২৫ মিনিটে এই অংশটি দেখা যাবে। নীচে দু'জনের কথোপকথন হুবহু তুলে দেওয়া হলো।

Advertisement

সাংবাদিক: আপনারা কোন হাসপাতাল থেকে আসছেন?

তরুণী: আমি কিন্তু নাগরিক, আমি কোনও ডাক্তার নই।

সাংবাদিক: আজকে ডাক্তারদের ডাকে যেই মিছিল তাতে আপনারা শামিল হতে চান?

তরুণী: একদম, একদম, একদমই তাই।

সাংবাদিক: কোন জায়গা থেকে ডাক্তারদের এই স্বাস্থ্যভবন অভিযানে আপনাদের শামিল হওয়া?

তরুণী: কালকে সুপ্রিম কোর্টে বলা হয়েছে জুনিয়র ডাক্তাররা সত্ত্বর কাজে ফিরুন। কারণ, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির কারণে প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে, যে কথাটা ভীষণ রকম একপেশে। এটা ঠিক কথা যে মানুষ মারা যাচ্ছেন কিন্তু এটাও বিচার্য বিষয় যে রোজ কত মানুষ মারা যায়। আর সমস্ত মানুষের মারা যাওয়াই কি জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জন্য হচ্ছে? ৭৩০০ জুনিয়র ডাক্তাররা যদি কর্মবিরতিতে থাকেন তাহলে বাকি ডাক্তাররা কি কিছু করছেন না, নিশ্চই করছেন। এবং একই সঙ্গে এই খবরও রয়েছে যে আরজি করে কিন্তু পরিষেবা সম্পূর্ণ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে একপেশে ন্যারেটিভ তো আমরা মেনে নেব না।

এই কথোপকথন থেকে কার্যত পরিষ্কার হয়ে যায় যে তিনি কোনও চিকিৎসক নন, এবং নিজেই শুরুতে তা জানিয়ে দিয়েছেন। তবে সেই অংশটি কেটে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা প্রচার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা অল্ট নিউজের পক্ষ থেকে ভিডিওতে থাকা এই তরুণীর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলেরও সন্ধান দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, এই তরুণীর নাম দেবপ্রিয়া বন্দ্যোপাধ্য়ায়। পেশায় তিনি থিয়েটার কর্মী তথা অভিনেত্রী। তাঁর কথোপথনের অংশবিশেষ বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়িয়ে যাওয়ার পর তিনি এই বিষয়ে ফেসবুকেও একটি পোস্ট দেন। যা এখানে দেখা যাবে।

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, আন্দোলনকারী ডাক্তারদের নাম করে যে পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে, তা আসলে কোনও চিকিৎসকের নয়। বরং আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানো এক সমর্থকের এবং ভিডিওটি অসম্পূর্ণ।

 

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার বলছেন যে "মানুষ তো রোজই মরে।"

ফলাফল

ভিডিওতে থাকা তরুণী কোনও চিকিৎসক নন বরং এক সাধারণ নাগরিক যিনি জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে স্বাস্থ্যভবন অভিযানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্যটি কাটছাঁট করে শেয়ার করা হয়েছে।  

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement