scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: হিন্দুদের ভোট দিতে দেবেন না শুভেন্দু অধিকারী? না, ভাইরাল ভিডিয়োটি সম্পাদিত

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, তিনি হিন্দুদের ভোট দিতে দেবন না।

Advertisement

গত লোকসভা নির্বাচনের পর সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা উপ-নির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছে পদ্ম শিবিরের। বাংলায় দলের বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে কয়েকদিন সায়েন্স সিটিতে কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সেই বৈঠক থেকে রাজ্যে মুসলিমদের ভোট না পাওয়ায় দলের সংখ্যালঘু মোর্চা তুলে দেওয়ার ঘোষণা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। 

তবে এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর একটি প্রেস কনফারেন্সের একটি ভিডিয়ো বেশ ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োতে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “হিন্দুদের ভোট দিতে দেব না।” ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী হিন্দুদের বিরুদ্ধে এহেন মন্তব্য করেছেন।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিয়োটি শেয়ার করে লিখেছেন, “দেখুন শুভেন্ডু বলছে, ও নাকি হিন্দুদের ভোট দিতে দেবে না। তার পরেও হিন্দুরা ওকে বিশ্বাস করবে?” (ক্যাপশনের সব বানান অপরিবর্তিত।) এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে। 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিয়োটি সম্পাদিত। বরং আসল ভিডিয়োতে প্রশাসন ও রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এবাবের উপনির্বাচনে নতুন ট্রেন্ড হিন্দুদের ভোট দিতে দেব না।”

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত, শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের প্রধান বিরোধী মুখ এবং তাঁর দল বিজেপি বরাবরই হিন্দুদের পক্ষে কথা বলে। তাই বিজেপি নেতা হয়ে তিনি যদি বলেন যে হিন্দুদের ভোট দিতে দেব না তাহেল সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই প্রথম শ্রেণির সংবাদমাধ্যমগুলিতে প্রকাশিত হত। কিন্তু আমরা আমাদের কিওয়ার্ড সার্চে কোনও সাংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাইনি যা থেকে এর সত্যতা প্রমাণ হয়।

Advertisement

তবে ভাইরাল ভিডিয়োটি পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা সেখানে ‘24hrstv’ নামক একটি চ্যানেলের ওয়াটার মার্ক লক্ষ্য করি। সেই সূত্র ধরে আমরা ওই চ্যানেলের ফেসবুক পেজে গত ১৬ জুলাই “নতুন নিয়ম হিন্দুদের ভোট দিতে দেব না,বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারী” শিরোনামে ভাইরাল ভিডিয়োর আসল সংস্করণটি খুঁজে পাই। সেই ভিডিয়োতে শুভেন্দু আধিকারীকে বলেন, “এবাবের উপনির্বাচনে নতুন ট্রেন্ড হিন্দুদের ভোট দিতে দেব না।” 

এরপরেরই শুভেন্দু আধিকারীকে তাঁর করা মন্তব্য ব্যাখা করতে দেখা যায়। সেখানে তিনি বলেন, “রানাঘাট দক্ষিণ, বাগদা ও মানিকতলায় কোনও হিন্দুকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।” অর্থাৎ এর থেকে স্পষ্ট যে শুভেন্দু আধিকারী সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা উপ-নির্বাচন নিয়ে এই মন্তব্য করেন। পাশাপাশি ভিডিয়োর বাকি অংশ শুনলে এটা বোঝা যায় যে তিনি রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ভোট না দিতে দেওয়া প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছেন।

এরপর আমরা উক্ত তথ্য়ের উপরে ভিত্তি করে পুনরায় কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন আমরা গত ১৬ জুলাই ইটিভি বাংলার একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। সেখানে লেখা হয়েছে, “বাংলায় সদ্য সমাপ্ত ৪টি বিধানসভা উপনির্বাচনে (১০ জুলাই) শাসক শিবির তৃণমূলের অত্যাচারের কারণে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই ৷ মঙ্গলবার এই দাবি তুলে ভোটারদের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে শুভেন্দু অধিকারী পৌঁছন রাজভবনে ৷ রাজ্যপালের কাছে অভিযোগও জানান তিনি এবং দাবি করেন, হিন্দুদের ভোট দিতে আটকাচ্ছে তৃণমূল ৷”

এরপর আমরা এই একই তথ্য খুঁজে পাই গত ১৬ জুলাই ওয়ান ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনেও। সেখানে লেখা হয়েছে, “রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূলের নতুন ট্রেন্ড হিন্দুদের ভোটদানে বাধা দেওয়া। এদিন একশো জন ভোট দিতে না পারা সহ-নাগরিককে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পর রাজভবনের বাইরে করা সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হিন্দুদের ভোট দিতে দেব না বলে কোনও মন্তব্য করেননি। বরং তিনি রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে এই মন্তব্য করেন।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন তিনি হিন্দুদের ভোট দিতে দেবন না।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিয়োটি সম্পাদিত। বরং রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে মন্তব্যটি করেন শুভেন্দু অধিকারী।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement