scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: সৌদির মসজিদে নিষিদ্ধ হয়েছে লাউডস্পিকার? না, আসল কাহিনি জানুন

ভাইরাল পোস্টকার্ডে লেখা হয়েছে, "ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত! মসজিদে লাউডস্পিকারে নামাজ নিষিদ্ধ করল সৌদি আরব!" পোস্টকার্ডটি বহু মানুষ শেয়ার করেছেন এবং ভারতেও এই নিয়ম বলবতের দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement
সৌদির মসজিদে নিষিদ্ধ হয়েছে লাউডস্পিকার? সৌদির মসজিদে নিষিদ্ধ হয়েছে লাউডস্পিকার?

বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে রমজান মাস একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাঁরা সকলেই এই ত্যাগ বা কোরবানির মাসটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। শীঘ্রই শুরু হবে সেই রমজান মাস।  এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়া ও কিছু সংবাদ মাধ্যমে ঘুরছে একটি চমকে দেওয়ার মতো দাবি। যাতে বলা হচ্ছে, সৌদি আরব নাকি নমাজ পাঠের সময় ওই দেশের সমস্ত মসজিদে লাউডস্পিকার ব্যান বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, The Thoughtful Bengali নামের একটি ফেসবুক পেজের তৈরি একটা পোস্টকার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ঘুরছে। ওই পোস্টকার্ডে লেখা হয়েছে, "ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত! মসজিদে লাউডস্পিকারে নামাজ নিষিদ্ধ করল সৌদি আরব!" (সব ধর্মের ভাবাবেগকে সম্মান জানিয়ে পোস্টকার্ডের পুরো লেখাটি আমরা এখানে ব্যবহার করছি না।) পোস্টকার্ডটি বহু মানুষ শেয়ার করেছেন এবং ভারতেও এই নিয়ম বলবতের দাবি জানিয়েছেন।

এছাড়া আমরা দেখতে পাই News18,  The Print, Live Hindustan-এর মতো কিছু ইংরেজি ওয়েবসাইটে একই তথ্য-সহ খবর প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বাংলা সংবাদমাধ্যম Ei Samay, Barak Taranga-এও একই খবর প্রকাশ পেয়েছে।

যদিও ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম তদন্ত করে দেখেছে যে, সৌদি সরকারের তরফে মসজিদে লাউডস্পিকারের ব্য়বহার নিয়ন্ত্রিত করা হলেও নিষিদ্ধ করার কোনও নির্দেশ জারি করা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।

কীভাবে এগোল অনুসন্ধান?

ইন্টারনেটে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করলে, সৌদির Ministry of Islamic Affairs-এর তরফে ৩ মার্চ টুইট করা একটা নির্দেশ আমাদের নজরে পড়ে। রমজান মাসে দেশের মসজিদগুলোর জন্য ওই নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু ওই নির্দেশের কোথাও মসজিদের লাউডস্পিকার ব্যান বা নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেখা যায়নি।

Advertisement

কী রয়েছে নির্দেশনামায়?

Ministry of Islamic Affairs-এর জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসে ইমাম ও মুয়াজ্জিমদের যথা সময়ে মসজিদে উপস্থিত থাকতে হবে। তাঁরা কেউ যেন অনুপস্থিত না থাকেন। সমসসূচি মেনে সমস্ত বিধি যেন পালন করা হয়। মসজিদগুলোর বাইরে থেকে আর্থিক অনুদান নেওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এছাড়া মসজিদে ছবি তোলা বা ধর্মচারণের ভিডিয়ো সম্প্রচারও ব্যাব ঘোষণা করা হয়েছে।

সৌদিতে লাউডস্পিকার সংক্রান্ত কী নিয়ম রয়েছে?

Gulf News, Saudi Gazette ও Freepress Journal সূত্রে খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ে সৌদির মসজিদগুলোর জন্য একটি নিয়ম চালু করেছিল মিনিস্ট্রি অফ ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স। মসজিদের বাইরের দিকে সর্বোচ্চ চারটি লাউডস্পিকার ব্যবহার করা যাবে বলে জানান হয়েছিল।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পারি, ২০২১ সালেও লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ে বিশেষ নির্দেশ জারি করেছিল সৌদি সরকার। লাউডস্পিকারের সর্বোচ্চ শব্দমাত্রা বেধে দেওয়া হয়েছিল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দাবিটি ঘুরছে সেই বিষয়ে যথাযথ তথ্য পাওয়ার জন্য ফ্যাক্ট চেট টিমের তরফে ভারতে অবস্থিত সৌদি আরবের দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁদের থেকে কোনও উত্তর পেলে, তা প্রতিবেদনে আপডেট করা হবে। তবে, সৌদি সরকারের জারি করা নির্দেশনামা ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এটা স্পষ্ট যে সৌদি সরকার মসজিদে লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি। বরং, তার সংখ্যা কমানো হয়েছে।  

 

ফ্যাক্ট চেক

Facebook

দাবি

মসজিদে লাউডস্পিকারে নামাজ নিষিদ্ধ করল সৌদি আরব

ফলাফল

সৌদি সরকার মসজিদে লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি। বরং, লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement