কয়েকদিন আগেই খবরটি সামনে এসেছে, বড়দিনের আগের দিন অর্থাৎ আগামী ২৪ ডিসেম্বর কলকাতায় আসছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তিনি কোনও রাজনৈতিক সমাবেশে যোগ দিতে আসবেন না। গীতা জয়ন্তী উপলক্ষে ১ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ হবে ব্রিগেডের ময়দানে। তাতেই অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। এই নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা ইতিমধ্যেই চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। আর এই মাঝেই রাজ্যে এবার চণ্ডীপাঠের আসর বসতে পাড়ে বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মন্ত্রী অখিল গিরি ও ফিরহাদ হাকিমের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলেও জানতে পারা যাচ্ছে। একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কলকাতা বা পূর্ব মেদিনীপুরের কোথাও এই চণ্ডীপাঠের আসর শীঘ্রই বসতে পারে। যেখানে একসঙ্গে থাকতে পারেন ৫ হাজার ব্রাহ্মণ।
প্রসঙ্গত বড়দিনের আগে আগামী ২৪ ডিসেম্বর গীতাজয়ন্তী উপলক্ষে ১ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ হবে ব্রিগেডের ময়দানে। তাতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গীতাপাঠে তিনি কণ্ঠ মেলাবেন। এছাড়াও কেন্দ্র ও রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব, আরএসএস এবং বিভিন্ন রাজ্যের সাধু সন্ন্যাসীরা উপস্থিত থাকবেন। জানা যাচ্ছে, গীতা পাঠের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন মঠ এবং মন্দিরের মিলিত মঞ্চ। গেরুয়াপন্থী সংগঠন অখিল ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতি পরিষদের তরফে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে এর পিছনে পুরোপুরিভাবে বিজেপি ও সংঘ পরিবার রয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। যদিও বিজেপির দাবি, তাদের তরফে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি।
সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিধানসভায় তিনি নিজেই এ কথা জানিয়েছিলেন। যদিও মমতা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন কিনা সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি। তবে নরেন্দ্র মোদীর কণ্ঠে গীতাপাঠ নিয়ে পালটা খোঁচা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি রোজ চণ্ডীপাঠ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে এও জানা গিয়েছে, তিনি একথাও জানিয়েছেন, গীতা পাঠ নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই। সূত্রের দাবি, তিনি বলেছেন, গীতাপাঠ করুক। আমি তো নিজেও রোজ চণ্ডীপাঠ করি। গীতাপাঠ নিয়ে কী অসুবিধা?
রাজনৈতিক মঞ্চ না হলেও গীতাপাঠের অনুষ্ঠানটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। কারণ আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে জানুয়ারিতে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই আবহে গীতাপাঠের এই অনুষ্ঠান তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গীতাপাঠের পাল্টা এবার রাজ্যে চণ্ডীপাঠের আয়োজন করা হতে পারে বলেই খবর সামনে আসছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চব্বিশের ভোটে হিন্দু ভোট ব্যাঙ্কে যাতে ঘুণ না ধরে সে দিকে সতর্ক তৃণমূল নেতৃত্ব। সে কারণেই চণ্ডীপাঠের মতো একটা কর্মসূচি শীঘ্রই নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাজ্যের ঠিক কোন জায়গায় এই আসর বসবে, কবে হবে অনুষ্ঠান, সে বিষয়ে কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। যদিও সূত্রের দাবি, রানি রাসমনি রোডে এই আসর বসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাতে এখনও সিলমোহর মেলেনি। পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও চন্ডীপাঠের আয়োজন হতে পারে বলেও একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে। তবে যেখানেই হোক সেখানে ৫ হাজারের বেশি মানুষ যাতে একযোগে অংশ নিতে পারেন সেই দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, চণ্ডীপাঠ অনুষ্ঠানে থাকতে পারেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সবটাই এখনও রয়েছে আলোচনার স্তরে। সূত্রের খবর, শীঘ্রই ববি হাকিমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চলেছেন সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের প্রতিনিধিরা। মন্ত্রী অখিল গিরির বক্তব্য, “ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ৫-১০ হাজার ব্রাহ্মণ চণ্ডীপাঠ করবে। সেটা আলোচনা করার জন্য ওরা বিধানসভাতে গিয়েছিল। ওদের সঙ্গে ববিরও কথা হয়েছে। ও বলেছে বৃহস্পতিবার অখিলের সঙ্গে কথা বলে আমরা সবটা জানাব। সেদিনই বাকি রূপরেখা ঠিক হবে।” সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের মধ্যেই চণ্ডীপাঠের আসরের জন্য দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যেতে পারে।