scorecardresearch
 

SSC Scam: পদাতিকে উঠলেন, শিয়ালদায় 'ভ্যানিশ' মন্ত্রী পরেশ, কন্যাকে নিয়ে কোথায়?

মঙ্গলবার রাতেই উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে মেয়েকে নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন মন্ত্রী পরেশ ৷ কিন্তু সকালে শিয়ালদা স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেস পৌঁছলেও সেই ট্রেনে ছিলেন না পরেশ অধিকারী বা তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা৷ তাই নিয়েই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।

Advertisement
 উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে মেয়েকে নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন মন্ত্রী পরেশ উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে মেয়েকে নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন মন্ত্রী পরেশ
হাইলাইটস
  • রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় আগেও দুর্নীতির একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে
  • । এবার সরাসরি অভিযোগ উঠেছে খোদ বাংলার শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীরর দিকেই
  • পার্সোনালিটি টেস্টে না বসেও এবং মেধাতালিকায় নাম না থেকেও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ

রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ  মামলায় আগেও দুর্নীতির একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। এবার সরাসরি অভিযোগ উঠেছে খোদ বাংলার শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীরর দিকেই। পার্সোনালিটি টেস্টে না বসেও এবং মেধাতালিকায় নাম না থেকেও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর  মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে মঙ্গলবার রাতের মধ্যে CBI জেরা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যও সুপারিশ করেন বিচারপতি। এদিকে মঙ্গলবার রাতেই উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে মেয়েকে নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন মন্ত্রী পরেশ ৷ কিন্তু সকালে শিয়ালদা স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেস পৌঁছলেও সেই ট্রেনে ছিলেন না পরেশ অধিকারী বা তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা৷ তাই নিয়েই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।

জানা যাচ্ছে শিয়ালদা স্টেশন নয় বুধবার ভোরবেলা বর্ধমান ষ্টেশনে মেয়ে এবং নিরাপত্তারক্ষিদের নিয়ে নেমে যান তিনি।  এক রেলকর্মীর দাবি, শিয়ালদহে না এসে সম্ভবত বর্ধমানের কাছাকাছি কোথাও নেমে গিয়েছেন মন্ত্রী এবং তাঁর মেয়ে৷ এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় নাম জড়িয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে৷ তাঁর মেয়েকে স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পাইয়ে দিতে তিনি প্রভাব খাটিয়েছেন, এই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷ অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলেই সিবিআই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে বলেও জানান বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ 

পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে কোচবিহারে চাকরি করছেন। কিন্তু মেধাতালিকায় নাম না থেকেও তিনি পার্সোনালিটি টেস্টে না গিয়েই চাকরি পেয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। SSC-র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, 'মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের প্রাপ্ত নম্বর ৬৬। পার্সোনালিটি টেস্ট ছাড়াই তাঁর নাম তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে'। এনিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়েছিল গোটা বাংলায়। তাতেই বাম জমানার প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে জেরার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু মঙ্গলবার কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে ছিলেন পরেশ অধিকারী৷ আদালতের নির্দেশ শুনে মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকে শিয়ালদহগামী পদাতিক এক্সপ্রেসে ওঠেন পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা৷ ট্রেনের এইচ -১ কামরার সি কেবিনে ছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু ট্রেনের কর্মীদের দাবি সকালের পরে আর দেখা যায়নি মন্ত্রী এবং তাঁর কন্যাকে। ট্রেনের অ্যাটেন্ডান্ট শেষবার তাঁকে দেখেন রাতে বেডরোল দেওয়ার সময়। এরপরে সকালে উঠে ট্রেনের অ্যাটেন্ডান্ট অথবা সামনের আসনে থাকা যাত্রী কেউই দেখতে পাননি মন্ত্রী এবং তাঁর কন্যাকে। মনে করা হচ্ছে সম্ভবত বর্ধমান অথবা তাঁর আগেই কোনও স্টেশনে নেমে গেছেন তিনি। এছাড়াও মন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং তাঁর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে নিতে কোনও গাড়ি শিয়ালদা ষ্টেশনে আসেনি বলেই জানা গেছে।   

বুধবার পদাতিক এক্সপ্রেস কলকাতায় পৌঁছলেও ট্রেন থেকে নামেননি পরেশ অধিকারী বা তাঁর মেয়ে৷ ট্রেনে থাকা এক রেলকর্মী দাবি করেন, মন্ত্রী আসছেন বলে তাঁদের কাছে খবর ছিল৷ সেই মতো ভোরবেলা মন্ত্রীর কিছু প্রয়োজন কি না, তা জানতে এইচ-১ কামরার সি কেবিনে যান তিনি৷ কিন্তু সেখানে ছিলেন না মন্ত্রী বা তাঁর মেয়ে৷ ওই রেলকর্মীরা জানান, অন্যান্য কয়েকজন যাত্রী জানান, ট্রেন বর্ধমানে ঢোকার আগেই নিজেদের মালপত্র নিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে যান পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়ে৷ ফলে, সম্ভবত তাঁরা বর্ধমানে নেমে গিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে৷ কলকাতায় সংবাদমাধ্যমকে এড়াতেই পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়ে বর্ধমানে নেমে গেলেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে৷

২০১৮ সালে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে এসেই পরেশ অধিকারী প্রভাব খাটিয়ে মেয়ের চাকরি ঘুরপথে আদায় করেছিলেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিনিময়ে মেখলিগঞ্জের তৎকালীন বাম নেতা মেয়ের চাকরি জোগাড় করেছিলেন। বর্তমানে সেই অঙ্কিতা অধিকারী কোচবিহারের একটি স্কুলে শিক্ষকতাও করছেন। কিন্তু অপর এক যোগ্য কর্মপ্রার্থী ববিতা সরকার যাঁকে বঞ্চনা করে তিনি চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ সেই কর্মপ্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এবার সেই মামলাতেই একেবারে কড়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। মঙ্গলবার ট্রেনে ওঠার আগে পরেশ অধিকারী জানিয়েছিলেন, কলকাতায় পৌঁছে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি৷  কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন, সেটাও অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী।

Advertisement