বিধানসভার বাইরে রাজ্যে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি বিধায়করা। তাদের দাবি বিধানসভার ভেতরে এ নিয়ে তাদের কোনো অভিযোগ শোনা হয়নি তাই তারা বিধানসভার বাইরেই এর প্রতিবাদে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হন। পাশাপাশি বিধানসভায় বিরোধী দলনেতাকেও শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরোনোর সময় পূর্বস্থলীর তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করেন।
বুধবার, অধিবেশনের প্রথম পর্বের কাজ শেষ হওয়ার পর নারী নির্যাতন ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি নিয়ে বিধানসভার গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। তখনই সাংবাদিকদের সামনে বিরোধী দলেনতা শুভেন্দু অধিকারী বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। শুভেন্দু বলেন, “বিধানসভার লবিতে আমি যখন বেরোচ্ছিলাম, তখন পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় আমাকে ফিজিক্যালি অ্যাসল্ট করতে চায়। বিজেপি এমএলএ-রা কেন্দ্রীয় বাহিনী পায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বাইরে রাখার অর্ডার রয়েছে। আমি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছি, লিখে পাঠাচ্ছি এখনই।”
বিধানসভার অধ্যক্ষকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানাচ্ছেন বিরোধী দলেনতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সূত্রে এমনটাই খবর। বিধানসভা সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে শুভেন্দু বলেছিলেন, মাধ্যমিকে ফেল করেছেন তপন চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে। একাধিক ফ্ল্যাট আছে। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় দুজনের। তপন চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, কোনও শারীরিক নিগ্রহ করা হয়নি। এ বিষয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ ও জেলা পুলিশে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন তপন চট্টোপাধ্যায়। তপনবাবু সংবাদ মাধ্যমকে জানান, লোকসভার সময় শুভেন্দু তাঁর এলাকায় গিয়ে মেয়েকে অসম্মান করেছেন। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার করেছেন। তিনি বলেন, "কলকাতায় দুটো ফ্ল্যাট নাকি আছে আমার। তাই চাবি চেয়েছি।" উল্লেখ্য, এর আগে বিষয়টি নিয়ে তপনবাবু শুভেন্দুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। স্পিকারকেও জানিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিধানসভা অধিবেশনের শুরু থেকেই নারী নির্যাতন ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি পাল্টা বলেন, “নারী নির্যাতন ঘটনা ঘটলে সবার আগে বাংলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়। ক্রিমিন্যাল জাস্টিস কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে রাজ্যের হাত থেকে।” আর সে ইস্যুতে তপ্ত হয়ে ওঠে অধিবেশন। বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে থাকেন। পাল্টা স্লোগান দেন শাসক বিধায়করাও। প্রথম পর্বের অধিবেশন শেষ হয়। বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন বিজেপি বিধায়করা। অভিযোগ, তখনই পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে শারীরিক হেনস্থা করেছেন। সূত্রের খবর, তপন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করছিলেন, শুভেন্দু অধিকারী তাঁর মেয়েকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। যা শুনেই বেজায় চটে গিয়েছেন তিনি। বিরোধী দলনেতার জবাব চান তিনি। আর ঠিক এরপরই শুভেন্দু অধিকারী আশঙ্কাপ্রকাশ করেন , বিধানসভার ভিতরে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে। তিনি বলেন, বিজেপি বিধায়করা কেন্দ্র থেকে নিরাপত্তা পান। তাঁদের বিধানসভার ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। ফলে এরকম ঘটনা ঘটলে তিনি বিধানসভার মধ্যেও নিরাপদ বোধ করছেন না।