অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন কলকাতায় 'সংহতি মিছিল'-এর ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কর্মসূচি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই দিন সংহতি মিছিল হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন। তবে শুভেন্দুর আবেদনে সাড়া দিল না কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে ওই দিনই কলকাতা শহরে হবে তৃণমূলের 'সংহতি মিছিল'। তবে আদালত শর্তও দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, মিছিল থেকে কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগে এমন মন্তব্য় করা যাবে না।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ করেছে বিরোধী শিবির। ওই দিন আমন্ত্রিত থাকলেও বিরোধী নেতানেত্রীরা যাচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও থাকবেন না। তিনি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন,'প্রাণ প্রতিষ্ঠার কাজ সাধুসন্তদের।' সোমবার সম্প্রীতির বার্তা দিতে কালীঘাট থেকে পার্কসার্কাস পর্যন্ত সংহতি মিছিলের ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর আবেদন, ওই দিন সংহতি মিছিল ঘিরে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই মিছিল পিছিয়ে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেদন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিও করেছিলেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু অধিকারীর বাহিনী মোতায়েনের আর্জি খারিজ করলেও হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশের ডিজি, আইজি এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে শান্তিশৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে। ব্লকস্তরেও সংহতি মিছিল করবে তৃণমূল। ওই মিছিলগুলির অনুমতি নিয়ে জেলাশাসক ও পুলিশকে নজর রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা। মঙ্গলবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে পাল্টা কর্মসূচির ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'ওই দিন হাজরা থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত সংহতি মিছিল হবে। সব ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই কর্মসূচি করব।' রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠারে ভোটের আগে গিমিক বলে আগে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় সরব হয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম জানান,'মোদী অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠান করছেন, এদিকে দিঘায় জগন্নাথদেবের মন্দির তৈরি করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাম ও জগন্নাথদেবকে ভোটের ময়দানে নামানোর বিরোধিতা করছি আমরা।' কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের কটাক্ষ,'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিযোগিতামূলক মেরুকরণ করছেন। মেরুকরণ করে ভোটে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে দুই দলই।'