সোমবার রাজ্যজুড়ে প্রতীকী অনশনের ডাক দিয়েছে জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস। অনশন চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৷ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার ১২ ঘণ্টা রাজ্যজুড়ে সবাইকে যার যার নিজের কর্মস্থলে প্রতীকী অনশনে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়েছে। স্থানীয় নাগরিক সমাজকেও এই কর্মসূচিতে যোগদান করার জন্য আবেদন করেছেন তাঁরা । এদিকে এদিনই বৈঠকে বসতে চাইছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-সহ সব চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান তিনি। সেই মর্মেই সংগঠনগুলিকে জানানো হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় হবে সেই বৈঠক। নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক সংগঠন থেকে দু’জন প্রতিনিধি থাকতে পারবেন বৈঠকে। কারা বৈঠকে থাকবেন তাঁদের নাম ইমেল করে জানাতে হবে।
এদিকে সরকারি হাসপাতালের পরে এবার একাধিক বেসরকারি হাসপাতালেও কর্মবিরতির ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা। সোমবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মেডিকায় নন ইমারজেন্সি পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে ফর্টিস, কোঠারি, উডল্যান্ড-সহ ৩০টিরও বেশি বেসরকারি হাসপাতালে আংশিক কর্মবিরতির ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা।
অভয়ার বিচার সহ ১০ দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ধর্মতলায় মঞ্চ বেঁধে অনশন করছেন আটজন জুনিয়র চিকিৎসক। অনশন চলছে উত্তরবঙ্গের মেডিক্যাল কলেজেও। ডাক্তারদের এই আন্দোলনকে ইতিমধ্যে সমর্থন জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এমনকি সিনিয়র ডাক্তাররাও জুনিয়রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়ররা গণইস্তফা দিচ্ছেন। এমনকি বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরাও আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। সোমবার থেকে আংশিক কর্ম বিরতি পালন করবেন বলে ঘোষণা করেছেন। এমনকি ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফেও অনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। জুনিয়রদের পাশে দাঁড়াতে এবং সংহতি জানাতেই এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। এমনকি রাজ্য সরকার যাতে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয় সেই মর্মে রাজ্য সরকারকেও বার্তা দেওয়া হয় চিকিৎসকদের তরফে।
এদিকে রবিবার চিকিৎসকদের জোড়া চিঠি দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। প্রথম চিঠিতে চিকিৎসক সংগঠনগুলিতে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। আর দ্বিতীয় চিঠিতে মঙ্গলবারের ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ প্রত্যাহার করার কথা বললেন মুখ্যসচিব। চিকিৎসকদের পাঠানো ইমেলে তিনি হাই কোর্টের ১১ অক্টোবরের একটি নির্দেশের কথা উল্লেখ করেছেন। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, মঙ্গলবারই রাজ্য সরকার আয়োজিত দুর্গাপুজোর কার্নিভাল রয়েছে। সেই কার্নিভালে জনসমাগম এবং আগতদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন তিনি।
আগামী মঙ্গলবার কলকাতার বড় পুজোগুলির প্রতিমা নিয়ে রেড রোডে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পুজো কার্নিভাল। আর ওই দিনই আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে এবং অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রানি রাসমণি রোডে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ ডেকেছে ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’। রানি রাসমণি রোড এবং রেড রোডের কার্নিভাল স্থলের দূরত্ব কয়েক মিটার বড় জোর। ফলে চিকিৎসকদের ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এ প্রশাসন অনুমতি দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। সেই আবহেই ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-কে চিঠি দিলেন মুখ্যসচিব।