সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় স্বস্তি পেল রাজ্যে সরকার। বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ পাঁচ আধিকারিককে তলব করে। ওই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন রাজ্যের মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা। লোকসভার সচিবালয়ের ওই নোটিসে আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৪ সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত বুধবার সরস্বতী পুজোর দিন টাকিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সেদিনের ঘটনার বিবরণী জানিয়ে লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটিকে চিঠি দেন তিনি।
বালুরঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের তরফ থেকে এই লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই সোমবার অর্থাৎ আজ রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার সহ তিন পুলিশ অফিসারকে সংসদীয় কমিটি তলব করে। শুধু তাই নয়, রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলাশাসককেও তলব করা হয়েছিল। ডিজি সহ তিনজন আইপিএস আর দুজন আইএএসকে তলব করা হয় এই ঘটনায়। বিষয়টি নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলায় সোমবার স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা সংসদীয় কমিটির সমনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। প্রসঙ্গত সংসদীয় কমিটির তলব সত্বেও সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন না মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমাররা। সূত্রের খবর, রবিবার রাজ্য প্রশাসনের তরফে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে আগামী ৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্যে আসছে। আর সেই কারণে মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ রাজ্য প্রশাসনের পাঁচ আধিকারিকের দিল্লি যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সূত্রের দাবি, চিঠিতে দিন পিছনোর আর্জিও জানানো হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের তরফে।
সোমবার বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। এই বিষয়টিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। বিষয়টি নিয়ে সংসদীয় কমিটির কাছে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়েছে শীর্ষ আদালত। চার সপ্তাহ পর ফের মামলাটির শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত গত বুধবার এক দলীয় কর্মসূচিতে টাকি গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেদিন ধস্তাধস্তির মাঝে অসুস্থ হয়ে যান তিনি। সেদিনের ঘটনা বিস্তারিত জানিয়ে লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটিকে চিঠি দেন বালুরঘাটের সাংসদ। সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, সন্দেশখালি ইস্যুতে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে পুলিশ। অন্যায়ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে তাঁকে। এরপরই সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন লোকসভার অধ্যক্ষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদ ত্রিবেদী, বসিরহাট পুলিশ জেলার এসপি হোসেন মেহেদি রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষকে সোমবার বেলা সাড়ে দশটায় সংসদ ভবনে হাজির হতে বলে সংসদের স্বাধিকার রক্ষা কমিটি।