scorecardresearch
 

TMC Shahid Dibas Government Notice: মেডিক্যাল টিম-পর্যাপ্ত রক্ত, TMC-র 'শহিদ দিবস'-এর সরকারি নোটিশে বিতর্ক

পঞ্চায়েত ভোটে গোটা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের জয়জয়কার। আর এই আবহেই আগামী শুক্রবার তৃণমূলের ২১ জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে দলের তরফে। আর এর মাঝেই স্বাস্থ্য দফতরের একটি নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisement
 শহিদ দিবসে সব সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল টিম শহিদ দিবসে সব সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল টিম

পঞ্চায়েত ভোটে গোটা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের জয়জয়কার। আর এই আবহেই আগামী শুক্রবার তৃণমূলের ২১ জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে দলের তরফে। আর এর মাঝেই  স্বাস্থ্য দফতরের একটি নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। 

স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শহিদ দিবস উপলক্ষে ২১ জুলাই প্রত্যেকটি হাসপাতাল যেন প্রস্তুত থাকে। তার সঙ্গে প্রতিটি ক্যাম্পে যেন রক্ত মজুত থাকে । শুক্রবার ধর্মতলায় ওই সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে যেন সমস্ত পরিকাঠামো প্রস্তুত থাকে সেই কথাও  বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা  হয়েছে। আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক একটি কর্মসূচিতে কেন সরকারি চিকিৎসক বা হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলা হবে, তা নিয়ে বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি  প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনও।

 

আরও পড়ুন

 

চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যেই  এই ধরনের নির্দেশিকাকে নজিরবিহীন বলে আখ্যা দিয়েছে। বাম সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্থ সার্ভিস ডক্টরস এই নির্দেশিকা বাতিলের দাবি জানিয়েছে। বাতিল না করলে তাঁরা আন্দোলনে নামবে বলে হুমকি দিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা। তিনি বলেন, অতীতে কখনও এই ঘটনা ঘটেনি। যেখানে শিশু সন্তানের মৃতদেহ ব্যাগে পুরে বাবাকে বাড়ি ফিরতে হয় অম্বুল্যান্স না পেয়ে, যেখানে চিকিৎসার ন্যূনতম সুযোগ মেলে না, রোগীদের রেফার করাই রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব, সেখানে সরকারি দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য এই রকম নির্দেশিকা দেওয়া মানবিকতার বিরোধী। মানস গুমটার আরও বক্তব্য, ওই তিনদিন হাসপাতালে কার্যত কোনও কাজ হবে না। তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্য কর্তারা পর্যন্ত শাসকের দলদাস হয়ে পড়েছে। এই ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এমনিতেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। স্বাস্থ্য কর্তারা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছেন।

Advertisement

বিষয়টির প্রতিবাদ করে সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘অপর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স নিয়ে কোনও মতে চলছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। সেখানে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের জন্য এমন আয়োজনের নির্দেশিকা বেআইনি।’ মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র-র কথায়, ‘পুরোপুরি দলীয় একটি কর্মসূচিকে স্বাস্থ্য দফতর যে ভাবে তাদের নির্দেশিকাতে শহিদ দিবস হিসেবে উল্লেখ করেছে, তা নিন্দনীয় এবং এর দ্বারা শাসকদল রীতিমত হুইপ জারি করছে।’

প্রসঙ্গ, ২১ জুলাই  তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ স্মরণ দিবস ৷ প্রতি বছরের মতো এবারও এই দিনে কলকাতায় তৃণমূলের মেগা ইভেন্ট বা মহা সমাবেশ হতে চলেছে ৷ তবে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল কর্মীদের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে এবছর দিনটিকে 'শ্রদ্ধা দিবস' হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওইদিন কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দেবেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা ৷ ইতিমধ্যেই তাঁদের আসা এবং থাকা-খাওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে ৷ তবে রাজ্যের শাসকদলের এই কর্মসূচির জন্য এবার জারি করা সরকারি নির্দেশিকা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক ৷  একাধিক চিকিৎসক সংগঠন বলছে,  এই নির্দেশিকা বেআইনি। এইভাবে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির জন্য নোটিশ দেওয়া যায় না। রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে এমনিতেই চিকিত্‍সক নার্সদের সংখ্যা কম। তারপরেও কেন নোটিশ দেওয়া হলো?নির্দেশিকা জারি করলেও পুরো বিষয়ে চুপ রয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।

প্রসঙ্গত, গত বছরেও এই ধরণের সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সময় রাজ্য পুলিশের এডিজি এবং ট্রাফিক অ্যান্ড রোড সেফটির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিজি রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তারপরই স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক এবং প্রধান গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নিকটবর্তী সমস্ত সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত মেডিক্যাল টিম মোতায়েন করতে।

Advertisement