কলকাতার রাস্তায় প্রকাশ্যে 'সেক্স'-এর অভিযোগ যুবক-যুবতীর বিরুদ্ধে। আর তার প্রতিবাদ করে মার খেলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। সাউথ পোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আইনজীবী রাধামোহন রায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
রাধামোহন রায়ের অভিযোগ, ৩ তারিখ রাত্রে তিনি গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রিন্সেপ ঘাট লাগোয়া স্ট্র্যান্ডরোডের কাছে তিনি দেখেন, এক যুবক ও যুবতী অর্ধনগ্ন অবস্থায় যৌনতায় মত্ত। তিনি দেখে গাড়ি থামিয়ে সেই যুগলকে এসব থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। 'পাবলিক প্লেসে Sexual Activity' করা যায় না বলে জানান। অভিযোগ, একথা শুনে সেই যুবক ও যুবতী তাঁর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। তাঁকে মারতেও উদ্যত হন।
রাধামোহন রায় বলেন, 'আমাকে মারধর করতে আসছে দেখে আমি চলে যাই। হাওড়ার দিকে যাচ্ছিলাম আমি। কিন্তু সেই যুবক ও যুবতী তখন আরও কয়েকজনকে ডেকে বাইকে করে আমার পিছন ধাওয়া করে। মাঝরাস্তায় তারা আমার গাড়ি আটকায়। আমাকে গাড়ি থেকে নামতে বলে। আমি গাড়ি থেকে নেমে তাদের বোঝাতে থাকি, রাস্তায় 'Sexual Activity' করা যায় না। সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও ওরা বোঝেনি। ৮-১০ জনের মধ্যে ২ জন যুবতীও ছিল। তাদেরই মধ্যে একজন বলে যে, ওকে মেরে ফেল। এরপরই সবাই মিলে আমার উপর চড়াও হয়। আমাকে কিল-ঘুষি-লাথি মারা হয়। আমি চোট পায়। এরপর আমার গাড়িতেও হামলা চালানো হয়। গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। আমি সেই অবস্থাতেই কোনওরকমে বাড়ি ফিরি। আমি প্রাণসংশয়ে ভুগছি।'
ওই আইনজীবী আরও জানান, তিনি সেদিন রাতেই ই-মেল মারফত থানায় অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগ পেয়ে সাউথ পোর্ট থানার তরফে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি থানায় যান। পুলিশকে গোটা ঘটনা জানান। পুলিশ জানায়, মেল মারফত যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটাকেই গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দোষীদের শনাক্ত করা হবে। তারপর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ওই আইনজীবী আরও জানান, সেদিন রাত্রে তাঁকে বিনা প্ররোচনায় মারধর করা হয়। সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধে না হয় সেজন্যই তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে এভাবে মারধর ও হেনস্থার শিকার হতে হবে তা ভাবেননি। তাঁর সংযোজন, 'আমি একজন আইনজীবী। হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করি। আমারই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা? এটা ভেবে দেখা দরকার প্রশাসনের।'
সূত্রের খবর, ওই আইনজীবীর কাছে থাকা জিনিসপত্র কেড়েও নেয় দুষ্কৃতীরা।
এই ঘটনা নিয়ে সাউথ পোস্ট থানার তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কে বা কারা এসব কর্মকাণ্ড রাস্তায় করছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।