আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ঘোষণা করেছে বিরোধী দলগুলো। UPA বিলুপ্ত করে জোটের নাম রেখেছে INDIA (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স)। বৈঠক নিয়ে আশাবাদী রাহুল গান্ধী। তিনি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, 'এই লড়াই NDA-র সঙ্গে ইন্ডিয়ার। এই লড়াই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ইন্ডিয়ার। বিজেপির আদর্শ ও ইন্ডিয়ার মধ্যে লড়াই চলছে। এই লড়াই দেশের জন্য, তাই আমরা ইন্ডিয়া নামটি বেছে নিয়েছি।'
আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, 'এনডিএ বা বিজেপি ইন্ডিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে? ভারতকে বাঁচাতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে। ইন্ডিয়া জিতবে, দেশ জিতবে।'
যদিও সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, তাঁদের লড়াই কংগ্রেস, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কোনও প্রশ্নই নেই। তিনি আরও বলেন, বিজেপি বিরোধী জোটের সদস্যদের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমানোর চেষ্টা করবেন।
ইয়েচুরি বলেন, বাংলায় বাম বনাম কংগ্রেস বনাম টিএমসি বনাম বিজেপি। বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে কোনও মুখ থাকবে না। জোট হবে একটি নির্দিষ্ট রাজ্যের জন্য।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী ঘোষণা করেছিলেন, কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি যৌথভাবে বাংলায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়বে।
যদিও এই বৈঠকের পর প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে অফিশিয়ালি কোনও বক্তব্য সামনে আসেনি। তবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের একাংশ যে ক্ষুব্ধ তা পরিষ্কার। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা কৌস্তব বাগচী, সুমন রায় চৌধুরী প্রমুখ। তাঁরা রাকঢাক না রেখেই বলছেন, এই জোটের বিরুদ্ধে তাঁরা।
এই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী বলেন, 'এই বৈঠক না হলেই ভালো হত। সেটা আমি নেতৃত্বকে জানিয়েছি। দিল্লির নেতারা এখনও আমাদের কোনও নির্দেশ দেননি। তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা করার কোনও নির্দেশ আসেনি। আমাদের তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে, তা চলবে। আমরা কী করে ভুলব যে, আমাদের ৮ কর্মীকে পঞ্চায়েতে খুন হতে হয়েছে। দিল্লির বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথা বলতে পারব না। আমরা পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস। এই রাজ্যে কংগ্রেসটা করি। রাজ্যটা বুঝি। তৃণমূলের অত্যাচার তো আমরা জানি। সেটা ভুলে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।'
অন্যদিকে সুমন রায় চৌধুরী বলেন, 'কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী নির্দেশ দেবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের যে কর্মীরা খুন হয়েছেন তাঁদের এখনও শ্রাদ্ধ-শান্তি হয়নি। আর তার মধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের এক টেবিলে বসা মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। তৃণমূলের সঙ্গে যদি আমাদের জোট করতে হয়, তাহলে সাধারণ কংগ্রেস কর্মীদের কাছে মুখ দেখাব কীভাবে ? কারণ, সেই মানুষগুলো ঝান্ডা নিয়ে দল করছে। গ্রামে তাঁরা পার্টি করতে গিয়ে মার খাচ্ছে তৃণমূলের হাতে। এরপরও যদি কেন্দ্রীয় নেতারা বলে, জোট করতে হবে সেক্ষেত্রে কিছু করার নেই। আমাদেরও তখন হয়তো সেই নির্দেশ মানতে হবে। তবে খারাপ লাগবে। সাধারণ কংগ্রেস কর্মীদের কথা ভেবে।'