তৃণমূলের অন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কি সংঘাত তৈরি হয়েছে? গত কয়েকদিন ধরেই এহেন জল্পনা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। যা নিয়ে টিপ্পনী করেছে বিরোধীরাও। বুধবার সকালে তৃণমূলের আইটি সেলের ইনচার্জ তথা মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের নেট মাধ্যমে একটি পোস্ট ঘিরে আরও একবার জল্পনা তৈরি হয়। ওই পোস্টে দেবাংশু লিখেছেন,'যতোই নাড়ো কলকাঠি, ভাঙতে পারবে না এই জুটি!' নীচে মমতা ও অভিষেকের ছবি।
দেবাংশুর পোস্ট ঘরে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সত্যিই মমতা ও অভিষেকের সংঘাত? আর এই সংঘাতে কলকাঠিই বা নাড়ছে কে? তিনি লিখেছেন,'শত্রু যতই শক্তি ধরুক, পেশি দেখাক 'দুঃসময়' ক্লাইম্যাক্সে ভালোবাসাই, জিতিয়ে দেবে ঠিক তোমায়..'। সেই সঙ্গে মমতার পায়ে প্রণামরত অবস্থায় অভিষেকের ছবিতে লেখা,'যতোই নাড়ো কলকাঠি, ভাঙতে পারবে না এই জুটি!'
বাংলা ডট আজতক ডট ইন-কে ফোনে দেবাংশু বলেন,'মা ভবতারিণীর সঙ্গে রামকৃষ্ণের সংঘাত চলতে পারে না। মা তারার সঙ্গে বামাখ্যাপার সংঘাত চলতে পারে না। একজন দেবী, অন্যজন উপাসক। তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন সেই রামকৃষ্ণ যিনি সবচেয়ে বড় উপাসকের দায়িত্ব পালন করতে পেরেছেন।'
সবই যখন ঠিক আছে তখন তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে কেন পরস্পরবিরোধী বক্তব্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে? দেবাংশুর ব্যাখ্যা, মতের অমিল থাকতেই পারে, এটাই স্বাভাবিক। একটা গণতান্ত্রিক দলে মতের অমিল না থাকলে পার্টিটা সিপিএম হয়ে যাবে, পার্টিটা উঠে যাবে। তৃণমূল কংগ্রেসের সেই গণতান্ত্রিক পরিসর আছে। তাই বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন মতামত দিচ্ছে। যারা এই মত বিনিময় বা মতান্তরকে দিদি বনাম দাদার দ্বন্দ্ব করে দেখাতে চাইছে, তারা সফল হবে না। বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা মতামত দেন আমাদের দলে। কুণাল ঘোষ, ফিরহাদ হাকিম যে বক্তব্য রাখছেন, তাতে মতের অমিল হচ্ছে, এর মানে দ্বন্দ্ব নয়। যে কোনও জায়গায় এগিয়ে চলার জন্য গণতান্ত্রিক মতামতের দরকার।'
হঠাৎ করে এই পোস্ট কেন করতে হল দেবাংশুকে? কে-ই বা কলকাঠি নাড়ছে? তৃণমূলের আইটি সেলের ইনচার্জের কথায়,'এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদলগুলি তৃণমূলের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে প্রচার করার চেষ্টা করছে। দিদি ও দাদার মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কিছু সংবাদ মাধ্যম ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি চক্রান্ত করে মমতা ও অভিষেকের মধ্যে ফাটল বলে তৃণমূল কর্মীদের মনোবল দুর্বল করার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ্যেই এই পোস্ট করেছি, যতই কলকাঠি নাড়ো, দাদা-দিদির সম্পর্কে চিড় ধরবে না।'