কলকাতায় বর্ষা আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবছরের মতোই এবারও ডেঙ্গির দাপট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ কলকাতায় এই রোগের প্রকোপ বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণ কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, চলতিবছর ২১ জুলাই পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৮৪ জন। গতবছর একই সময় এই সংখ্যা ছিল ২৭১ জন। ম্যালেরিয়ারও তথ্য দিয়েছে পুরসভা। গতবছর ২১ জুলাই পর্যন্ত কলকাতায় ম্যালেরিয়া হয়েছে ১৫৮টি। চলতিবছর ২১ জুলাই পর্যন্ত ম্যালেরিয়া হয়েছে ৯৫৪। ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। পুরসভার দাবি অনুযায়ী, এবছর ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, কলকাতার ১০টি ওয়ার্ডে যদি ডেঙ্গি হয়, তাহলে ৭-৮টা রোগীই কেন দক্ষিণ কলকাতায়?
কেন দক্ষিণ কলকাতায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি?
পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবীদ দেবাশিস বিশ্বাস বললেন, 'দক্ষিণ কলকাতায় প্রচুর পুকুর ও ফাঁকা জায়গা থাকায় এই এলাকায় মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। এসব জায়গায় জমে থাকা জলে ডেঙ্গির মশা ডিম পাড়ে এবং এর ফলে এই এলাকায় ডেঙ্গির দাপট বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, উত্তর কলকাতা অনেক পুরনো এলাকা হওয়ায় নতুন নির্মাণ কাজ কম হয় এবং ফলে এখানে মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তুলনামূলকভাবে কম।'
ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন
পুরসভা জানিয়েছে যে, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কেবল পুরসভার নয়। সাধারণ মানুষকেও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। পুকুর ও ফাঁকা জায়গাগুলোতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে এবং নিজেদের আশেপাশে পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে আমরা ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি।
ডেঙ্গির লক্ষণ ও প্রতিরোধ
ডেঙ্গির প্রধান লক্ষণ হল উচ্চ জ্বর। এছাড়াও মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, বমি ভাব, চোখের পিছনে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডেঙ্গি হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নাও হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতেই চিকিৎসা করা যেতে পারে।
ডেঙ্গি প্রতিরোধের উপায়:
বাড়ির চারপাশে জমে থাকা জল নিয়মিত পরিষ্কার করা।
মশারি ব্যবহার করা।
মশা নিধনকারী ওষুধ ব্যবহার করা।
শরীর ঢেকে রাখা।
মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য প্রতিরোধক ব্যবহার করা।