ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হলে সমস্যা ছিল না, কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে ঝিরঝিরে। যেকারণে চিন্তায় কলকাতা পুরসভা। কারণ ওই বৃষ্টিতে পরিস্কার জল জমছে। এবং মশার লার্ভা জমছে। ভারী বৃষ্টি হলে লার্ভা ধুয়ে যেত। কিন্তু তা হচ্ছে না। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগ বিষয়টিতে চিন্তিত। কলকাতার লোকজনের কাছে, তাঁদের আবেদন বাড়ির আশেপাশে কোনও পাত্রে জমা জল থাকলে তা ফেলে দিতে হবে।
একজন আধিকারি জানিয়েছেন, যদি এই সপ্তাহে শহরে ভারী বৃষ্টিপাত না হয়, তবে এটি মশার বংশবৃদ্ধির জন্য আরও অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে। কারণ ভারী বর্ষা মশার লার্ভা ধুয়ে ফেলে। পুরসভা সূত্রে খবর, এই বছর এ পর্যন্ত শহরে প্রায় ৩৫০ জন মানুষ ডেঙ্গি ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সংক্রমণের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০০।
ডেঙ্গিতে শহরে কয়েকটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে পুরসভা ডেঙ্গি মৃত্যু নিয়ে কোনও পরিসংখ্যান দেয়নি। শহর ঘুরে দেখা গেছে, চায়ের কাপ, থার্মোকলের পাত্র, ডাবের খোলা এবং মাটির ভাঁড়ে জল জমে রয়েছে। কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, জমে থাকা বর্জ্য মশা-প্রজনন স্থানে পরিণত হয়, বিশেষ করে বর্ষাকালে।
পুরসভা জানিয়েছে, কোনও জলের পাত্রে মশার লার্ভা দেখা গেলে তা ফেলে দিতে হবে। জলের অভাবে মশার অভাবে লার্ভা বাঁচবে না। পুরকর্মীরা যদি সব কোনা-কানচিতে ঢুকতে না পারে, তাহলে লার্ভিসাইড স্প্রে করবে। এডিস মশা লার্ভা থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হতে এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় নেয়। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার জমে থাকা জল নিষ্কাশন করা উচিত।
প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। আসছে মৃত্যুর খবর। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের বড় অংশ জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং কড়া নজরদারিতে থাকাই উপায় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
বর্ষা শুরু হতেই জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও বাড়ছে ডেঙ্গির দাপট। গত বছরের মতো এ বারেও উত্তরের তুলনায় দক্ষিণে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। ডেঙ্গি প্রতিরোধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। দক্ষিণ কলকাতায় ফাঁকা জমি, তালাবন্ধ বাড়ি, অব্যবহৃত পুকুরের উপরে নজর রাখছে পুরসভা, কারণ ওই সব জায়গাতেই নোংরা আবর্জনা ফেলার প্রবণতা বেশি বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা। তাঁদের মতে, এই ধরণের জায়গাগুলিই হয়ে ওঠে ডেঙ্গি-বাহক মশার আঁতুড়ঘর। নাগরিক সচেতনতার অভাবের কথা জানাচ্ছেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ থেকে কাউন্সিলার সকলেই। সচেতনতা বাড়াতে লাগাতার মাইকিং শুরু করেছে পুরসভা।