কলকাতা ঢেকে গিয়েছে পুজোর বড় বড় হোডিংয়ে। বহু বাড়ির আগাপাশতলা ঢেকেছে বিলবোর্ডে। যেকারণে রাস্তাঘাটের নজরদারিতে লাগানো বহু সিসি ক্যামেরা ঢেকে গিয়েছে। বহু বাড়ির বারান্দা, জানলা ঢেকে গিয়ে হাওয়া-বাতাস ঢুকছে না বলেও জানা গেছে। যথেচ্ছে হোডিংয়ে তিতিবিরক্ত কলকাতার একাধিক এলাকার বাসিন্দারা। মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারছেন না অনেকে। কিন্তু সমস্যায় পড়েছেন বিলক্ষণ। রাস্তার আলোও ঢেকে গেছে বহু জায়গায়।
কিছু হোর্ডিং তিন তলা বিল্ডিংয়ের মতো লম্বা। যেগুলির জেরে ফুটপাথও দেখা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে যদি আগুন লাগে, তাহলে অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের প্রথমে হোর্ডিংয়ের স্তরগুলি কেটে ফেলতে হবে। তারপর আগুন নেভানো যাবে, আশঙ্কা অনেকেরই। হোর্ডিং-এর লম্বা প্রাচীর, যা রাস্তার আলোর উচ্চতা পর্যন্ত উঠে, আলোহীন করেছে বহু রাস্তা। সূর্যাস্তের পরে হাঁটার পথগুলিকে অন্ধকার সুড়ঙ্গে পরিণত করেছে ওইসব হোডিং।
কালীঘাটের দমকল কেন্দ্রের কাছে হাজরা রোড বরাবর একটি ফুটপাথের অবস্থা এখন এমনই। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের অংশগুলিও সেরকমই। রাস্তায় আলো, কিন্তু ফুটপাথে ঘুটঘুটে অন্ধকার। বয়স্করা বেশি সমস্যায় পড়ছেন।
দক্ষিণ কলকাতার বহু সিসি ক্যামেরা হোডিংয়ের জন্য ঢেকে গিয়েছে বলে পুলিশসূত্রে খবর। বহু উদ্যোক্তারা বিষয়টি জানতে পেরে হোডিং সরিয়েছে। কারণ এই এলাকায় কোনও অপরাধ হলে, তা শনাক্ত করা শক্ত হয়ে যাবে।
বালিগঞ্জের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, আগুন লাগলে কী ঘটবে তা ভেবে তিনি আশঙ্কায় আছেন। হোডিং লাগানো বাড়িগুলিতে আগুন লাগলে তো মানুষ তা দেখতেই পারবেন না। ফলে বড় বিপদ হতে পারে। এবং দমকলকর্মীদের আগুন নেভানোর আগে হোডিং সরানোর কাজ করতে হবে, ফলে জটিলতার কোনও শেষ থাকবে না।
দেখা গেছে, রাশবিহারী অ্যাভিনিউতে ট্রায়াঙ্গুলার পার্কের কাছে একটি বাঁশের ফ্রেমের চারটি হোর্ডিং রাখার জায়গা রয়েছে, একটির উপরে একটি। বেশিরভাগ ফ্রেমে দুই বা তিনটি হোর্ডিংয়ের জায়গা থাকে। আগে এসব ফ্রেমে একটি মাত্র হোর্ডিং ছিল।
ওবেরয় গ্র্যান্ড এবং পিয়ারলেস ইনের মধ্যে চলমান রাস্তা, ইএম বাইপাস বা চৌরঙ্গি প্লেসে - ক্যাপ্টেন ভেরি - একটি বড় জলাশয় বরাবর হোর্ডিংগুলি একটি সাম্প্রতিক ঘটনা। কলকাতা পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান মেয়র কাউন্সিল সদস্য দেবাশিস কুমার স্বীকার করেছেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই প্রসারিত জায়গাগুলি হোর্ডিং-বিহীন ছিল।
পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরসভা বিষয়টির কোনও নজরদারি করে না। পুজোর হোডিংয়ে ট্যাক্স নেওয়া যাবে না। যেকারণেই হোডিংয়ের এত বাড়বাড়ন্ত। তবে দেবাশিস কুমারের জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে এজেন্সিগুলির কাছ থেকে ট্যাক্স নেবে।