এবার পুজোয় বাঙালির পাতে পড়বে না পদ্মা-মেঘনার ইলিশ। আপাতত রপ্তানি বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি গতমাসে ঘোষণা করেছিলেন পুজোয় ভারতে তাঁদের দেশের ইলিশের অভাব হবে না। সেই মতো ৩৯৫০ টন ইলিশ ভারতে পাঠানোর কথা জানিয়েছিল সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু চলতি বছরে আসল সময় অর্থাৎ পুজোর দিনগুলি এপারে বাংলাদেশের ইলিশ মিলবে না, এমনটাই মনে করছেন মাছ ব্যবসায়ী এবং আমদানিকারকেরা। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশের ইলিশ আসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দিন কুড়ি এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
বাংলাদেশ সরকার চলতি বছরের গতমাসের মাঝামাঝি ঘোষণা করেছিল এ বছর তারা ভারতকে ৩৯৫০ টন ইলিশ রফতানি করবে। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত মাত্র ৫৬০ টন আমদানি করেছেন কলকাতা তথা ভারতের আমদানিকারকেরা। বাকি ৩৩৯০ টন কবে পাওয়া যাবে, আদৌ পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে। তবে পুজোর মধ্যে যে পাওয়া যাবে না, তা স্পষ্ট। কারণ, বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশে ইলিশ ধরা, খাওয়া, বিক্রি, পরিবহণ—সবই বন্ধ। এমনকী পূর্ব ঘোষিত রফতানিও বন্ধ থাকবে আপাতত।
ইলিশ আমদানিকারকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রক ৩৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল সে দেশের রফতানিকারকদের। সংশ্লিষ্ট নির্দেশনামায় বলা ছিল ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এই রফতানি শেষ করতে হবে। সেই সঙ্গে নির্দেশনামায় শর্ত দেওয়া ছিল, বাংলাদেশ সরকার কোনও কারণে দেশে ইলিশ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপ করলে রফতানিও বন্ধ থাকবে। এই শর্তই প্রতি বছর বলবৎ থাকে। সেই মতো দ্রুত আমদানি সেরে ফেলা হয়।
তারপরও এ বছর আমদানিকারকেরা অল্প করে মাছ আনাচ্ছিলেন। যাতে চাহিদা অনুযায়ী আমদানি করা যায়। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বেশি লাভ করার লক্ষ্যে আমদানিকারকেরা ওই কৌশল নিয়ে থাকতে পারেন। সেই কারণে এবার বাংলাদেশের ইলিশের দাম অস্বাভাবিক বেশি ছিল। বেশিরভাগ মানুষ দামের জন্য কিনতে পারেননি। অল্প করে আমদানি করার কারণেই মাত্র ৫৬০ টন বুধবার পর্যন্ত এসেছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শর্তের কথা বিবেচনায় রেখে আমদানি করে বাজারে ঢালাও সরবরাহ এবং সংরক্ষণ করা হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।