scorecardresearch
 

Shovabazar Rajbari Durga Puja: শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গা তুষ্ট হন মিষ্টিভোগে, কী কী থাকে?

Shovabazar Rajbari Durga Puja: কলকাতার প্রথম পুজো হিসাবে পরিচিত শোভাবাজার রাজবাড়ি। শহরের থিম পুজোর মধ্যে আজও এই রাজবাড়ির সাবেকি পুজো সমানভাবে জনপ্রিয়। দুর্গাপুজোয় থিমের ভিড়ে আজও স্বাতন্ত্র্য ধরে রেখেছে শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। পুজোর সময় এই বাড়ির দালান ভর্তি থাকে দর্শনার্থীর ভিড়ে। পুজোর পাঁচটা দিন সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই রাজবাড়ির ফটক।

Advertisement
শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো
হাইলাইটস
  • কলকাতার প্রথম পুজো হিসাবে পরিচিত শোভাবাজার রাজবাড়ি। শহরের থিম পুজোর মধ্যে আজও এই রাজবাড়ির সাবেকি পুজো সমানভাবে জনপ্রিয়।

কলকাতার প্রথম পুজো হিসাবে পরিচিত শোভাবাজার রাজবাড়ি। শহরের থিম পুজোর মধ্যে আজও এই রাজবাড়ির সাবেকি পুজো সমানভাবে জনপ্রিয়। দুর্গাপুজোয় থিমের ভিড়ে আজও স্বাতন্ত্র্য ধরে রেখেছে শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। পুজোর সময় এই বাড়ির দালান ভর্তি থাকে দর্শনার্থীর ভিড়ে। পুজোর পাঁচটা দিন সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই রাজবাড়ির ফটক। সাবেকি এই পুজোর গায়ে থিমের মাল-মশলা নেই, একেবারে বাড়ির পুজোর আমেজ পাওয়া যাবে এখানে। এই বছর শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো পা দিল ২৩৬ বছরে। এই পুজোর সঙ্গে মিশে রয়েছে ইতিহাসের গন্ধ। শোভাবাজার রাজবাড়ির এই পুজো নবকৃষ্ণ দেবের ছেলে রাজা রাজকৃষ্ণ দেবের বংশধরের পুজো। যা শুরু হয় ১৭৯০ সালে। শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোতে মাকে পুজোর চারদিন অন্ন ভোগ দেওয়া হয় না,মিঠাই ভোগ দেওয়ার রীতি রয়েছে এই রাজবাড়িতে।  

মিঠাই ভোগ দেওয়া হয়
এই বাড়িরই সদস্য শুভদীপ কৃষ্ণ দেব পুজোর ভোগ প্রসঙ্গে জানান,  শোভাবাজার রাজবাড়িতে দুরকমের ভোগ হয়। ষষ্ঠী থেকে নবমী কাঁচা চাল, সবজি, ফল দিয়ে নৈবেদ্য দেওয়া হয় এছাড়াও এই পাঁচদিন তাঁদের শোভাবাজার রাজবাড়িতে ভিয়েন বসে, সেখানে রাজবাড়ির নিজস্ব কিছু মিষ্টান্ন তৈরি হয়, যেটাকে মিঠাই বলা হয়। তিনি বলেন, 'সেই মিঠাই ভোগ মা দুর্গাকে নিবেদন করে আমরা বাড়ির সকলে সেই ভোগ গ্রহণ করি। ১০-১২ রকমের মিষ্টি-নোনতা খাবার হয়, যার মধ্যে লাল মিঠাই ও সাদা মিঠাই প্রধান। লাল মিঠাই হচ্ছে সাধারণ লাড্ডু ও সাদা মিঠাইকে মতিচুর বলা হয়, এটা একেবারে অন্যরকম মিষ্টি, যার স্বাদ দারুণ।' তিনি এও জানান, এই মিষ্টি ছাড়াও থাকে চৌকো গজা, যাকে ক্ষীর গজাও বলা যায়। এছাড়াও থাকে মিঠে গজা, পান্তুয়া ও জিলিপি থাকে। শোভাবাজার রাজবাড়ির এই জিলিপির বিশেষত্ব হল এটি সাধারণ জিলিপির চেয়ে একটু বড় হয়। এছাড়া সিঙাড়া, কচুরি, নিমকি থাকে, ভোগে দেওয়া হয়। পুজোর চারদিনই মিঠাই ভোগ দেওয়া হয় মাকে, জানান শুভদীপ কৃষ্ণ। 

Advertisement

আমিষ ও অন্নভোগ দেওয়া হয় না
শুভদীপ কৃষ্ণের কাছ থেকেই জানা যায় যে আগে তাঁদের বলি প্রথা ছিল। কিন্তু তা পরে বিশেষ কারণে বন্ধ হয়ে যায়। নবমীর দিন চালকুমড়ো, মাগুর মাছ বলি দেওয়া হলেও, পরে সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই শোভাবাজার রাজবাড়িতে ভোগ হিসাবে কিন্তু কোনও আমিষ ভোগ দেওয়া হয় না। এমনকী মাছ ভোগেরও কোনও নিয়ম নেই। বরং এই বাড়ির ভোগ বলতে মায়ের কাছে নিবেদন করা হয় মিঠাই বা মিষ্টি। মিষ্টি ও নোনতা সবই কিন্তু তৈরি হয় বাড়িতেই। মাকে দেব পরিবার অন্নভোগ দেন না। এমনিতেও, দেব বাড়ির আরাধ্য দেবতা গোপীনাথ রাধারানি। তাঁরও নিত্যপুজো হয়ে থাকে বাড়িতে।  

আরও পড়ুন

বিসর্জনের রীতি
শোভাবাজার রাজবাড়ির বিসর্জনেও রয়েছে বিশেষত্ব। শুভদীপ কৃষ্ণ বলেন, 'দশমীর দিন দুপুরের মধ্যেই মায়ের বিসর্জন হয়ে যায়, বিসর্জনের আগে প্রথা অনুযায়ী নীলকন্ঠ পাখি ওড়ানোর নিয়ম থাকলেও তা সরকারি বিধিনিষেধের কারণে এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে নীলকন্ঠ পাখির মূর্তি তৈরি করা হয়, সেটায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে তার পুজো করা হয়। আর সেটাকে নিয়েই বাড়ির সদস্যরা রওনা হন বিসর্জনের পথে। শুধু তাই নয়, নীলকন্ঠ পাখির সঙ্গে ঘোড়ার প্রতীকি হিসাবে ছোলার পুজো করা হয়। তিনি জানান যে আগে ঘোড়া পুজো হত, তবে তার প্রতীকি হিসাবে ছোলার পুজো হয়। কারণ মা রওনা দিচ্ছেন বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর ঘরের পথে, সেখানে সৈন্য-সামন্ত সবাইকে নিয়ে যাচ্ছেন, তাই তলোয়ার ও ছোলার পুজো করা হয় বিসর্জনের আগে। যাতে মা নিরাপদে শ্বশুরবাড়ি ফিরতে পারেন।' 

বিসর্জনের আগে কনকাঞ্জলি
শুভদীপ কৃষ্ণ এও বলেন, এরপর বড় হাঁড়িতে জলে তিরকাঠির মধ্যে দিয়ে আমরা সবাই মায়ের প্রতিবিম্ব দেখি, সেটা একটা প্রথা আছে আমাদের। দশমীর পুজোর আগে কনকাঞ্জলি প্রথাও রয়েছে, রুপোর থালাতে সোনার গিনি দিয়ে দেবীকে কনকাঞ্জলি দেওয়া হবে। এরপর মাকে কাঁধে করে গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যাই। যেহেতু মাকে কাঁধে বহন করেন রাজবাড়ির সদস্যরা তাই সেই কাঁধ কোনও শবদেহ বহন করে না। কেউ মারা গেলে হাতে ঝুলিয়ে নিয়ে যায় তাঁরা। এরপর মাকে নিয়ে গঙ্গার ঘাটে যাওয়া হয়। সেখানে দুটো নৌকায় মাঝে মাকে রেখে মাঝ গঙ্গায় গিয়ে তাঁকে বিসর্জন দেওয়া হয়। 

Advertisement