মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে। আর তার জন্য জরুরি অবতরণ করতে হয়। এই ঘটনায় কোমরে এবং পায়ে মারাত্মক চোট পান মুখ্যমন্ত্রী। এরপর তাঁকে দ্রুত কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। এসএসকেএম-এ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানতে পারেন, বাঁ পায়ের লিগামেন্টে চোট পেয়েছেন তিনি। চোট আছে কোমরেও। এছাড়া হাঁটুতেও জল জমার লক্ষণ পাওয়া গিয়েছে। যার জেরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। যদিও ভর্তি না হয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি। ঘটনার পর একদিন কেটে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কেমন আছেন তাই নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন রাজ্যবাসী। আর এর মাঝেই নবান্নের তরফে প্রকাশ করা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য বুলেটিন।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সরকারি তরফে হেলথ বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, 'মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ হাঁটুতে লিগামেন্ট ইনজুরি হয়েছে। বাঁদিকে হিপ জয়েন্টেও গতকাল লেগেছিল। তবে এদিন তাঁর পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও তাঁর যন্ত্রণা রয়েছে। চলতে ফিরতে গেলে আরও লাগছে। আজ সন্ধ্যায় একজন ফিজিওথেরাপিস্ট সহ চিকিৎসকদের একটি টিম তাঁর শরীরের পরীক্ষা করেছেন। তাঁকে এদিন দুঘণ্টা ধরে ফিজিওথেরাপি সেশন দেওয়া হয়েছে। ওষুধটা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছি। কিছু সময়ের জন্য চলা হাঁটা একটু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বলা হয়েছে। ফিজিওথেরাপি সেশন আগের মতোই চলবে। '
জানা যাচ্ছে, বুধবার বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোট পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম থেকে চিকিৎসকদের একটি দল তাঁর কালীঘাটের বাড়ি যান। প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় তাঁর বাড়িতে ছিল চিকিৎসক দলটি। প্রসঙ্গত, সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট, সেক্ষেত্রে নির্বাচনী ব্যস্ততার জন্যই হয়ত মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য বুলেটিন সামনে আসার পর অনেকেরই ধারণা এখনই হয়তো পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে যেতে পারবেন না তিনি। এর আগে একুশে বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে পায়ে বড়সড় চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবার বাম পায়ের হাড়ে বড়সড় চোট পেয়েছিলেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করে প্লাস্টার করতে হয় পায়ে। সেই প্লাস্টার করা পা নিয়েই হুইল চেয়ারে করে সারা রাজ্য ঘুরে প্রচার চালিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।