নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)-এর বাড়ি বিতর্কে তাঁর পাশে দাঁড়ালেন বাংলার বিশিষ্টরা। রবিবার বাংলা আকাডেমির সামনে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে। শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়ি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আকাদেমির প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতির বিশিষ্টরা। অমর্ত্য সেন কেন্দ্রের শাসকদলের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তাদের নীতি সম্পর্কে অনেক মন্তব্য করেছেন। আর সেই কারণে তাঁকে বিভিন্ন সময় বিজেপির সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আকাদেমির সামনে প্রতিবাদ সভার আহ্বান করেছেন রাজ্য়ে জৈবপ্রযুক্তি মন্ত্রী-নাট্যকার ব্রাত্য বসু (Bratya Bose)।
শান্তিনিকেতনে রয়েছে অমর্ত্য সেনের বাড়ি 'প্রতীচী'। ওই বাড়িকে ঘিরে বিতর্ক। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ের একাশের দাবি, ওই বাড়ির সংলগ্ন জমির একাংশ তাদের। এদিন ব্রাত্য অভিযোগ করেছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলায় অমর্ত্য সেনের সঙ্গে এমন করা হচ্ছে।
এদিন ব্রাত্য বসু (Bratya Bose) কেন্দ্রীয় সরকারের তুমুল সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, অমর্ত্য সেনের পাঠভবন স্কুলে যোগাযোগ। তিনি সেখানকার ছাত্র ছিলেন শান্তিনিকেতনের সঙ্গে তিনি লতায়-পাতায় জড়িয়ে। তিনি বিজেপিবিরোধী মন্তব্য করায় শান্তিনিকেতন থেকে বিজপি তাঁর শিকড়টা তুলে দিতে চাইছে। বিজেপি বিরোধী কথা বললে ঘটি-বাটি-চাটি হয়ে যাবে। তাই আমরা সভা ডেকেছি।
এদিন ব্রাত্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বোন, বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন। অমর্ত্য যাতনা সহ্য করতে হয়েছে। অমর্ত্য সেনকে অপমান করা মানে রবীন্দ্রনাথকেও অপমান করা। তিনি ব্রিটিশদের বিরোধিতায় নাইট উপাধি ছেড়েছিলেন। তবে ব্রিটিশরাও কখনও বলেনি রবীন্দ্রনাথকে বিশ্বভারতী থেকে উৎখাত করব, পাঠভবন উপড়ে ফেলে দেব।
তিনি জানিয়েছে, প্রতিবাদ সভায় থাকবেন কবি জয় গোস্বামী, কবি সুবোধ সরকার, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন যোগেন চৌধুরী, পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, শিল্পী কবীর সুমন, চিত্রপরিচালক অরিন্দম শীল, রাজ চক্রবর্তী, সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই নবান্ন সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগের তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তিনিকেতনের বাড়ি বিতর্কে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে এবার চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে অমর্ত্য সেনের পাশে থাকার কথাই বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
অমর্ত্য সেনকে চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও লিখেছেন, 'শান্তিনিকেতনের সঙ্গে আপনাদের পরিবারের গভীর যোগসূত্র সকলেই জানেন। আট দশক আগে শান্তিনিকেতনে প্রতীচী নির্মাণ করেছিলেন আপনার বাবা আশুতোষ সেন। এখন আপনার পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ভিত্তিহীন ও বিস্ময়কর অভিযোগ করছে বিশ্বভারতীর অধুনা কিছু বহিরাগত। এটা আমায় কষ্ট দিচ্ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ গোঁড়ামির বিরুদ্ধে আপনি লড়াই করছেন। তা করতে গিয়ে অপশক্তিগুলির শত্রু হয়ে উঠেছেন। এই লড়াইয়ে আমি আপনার পাশে আছি। অসহিষ্ণুতা ও একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আপনার বোন ও বন্ধু হিসেবে পাশে থাকব। ওদের মিথ্যা অভিযোগ ও অসত্য আক্রমণে দমবেন না। আমরা জয় করবই।'