কলকাতা সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়েছে ১৯৫২ সালে বাংলাদেশে মাতৃভাষা আন্দোলনের বীর শহিদদের।
কলকাতার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজন করেছে নানা অনুষ্ঠানের। এ ছাড়া ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, ছত্তিশগড়সহ বিভিন্ন রাজ্যের বাংলাভাষীদের উদ্যোগে চলছে নানা কর্মসূচি।
শনিবার বিকেল থেকেই কলকাতার একাডেমি অফ ফাইন আর্টস চত্বরের রাণুছায়া মঞ্চে আয়োজন করা হয় ভাষা দিবসের নানা অনুষ্ঠানের। ভাষা চেতনা সমিতি আয়োজিত এই অনুষ্ঠান এবার ২৩ বছরে পা দেয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ১০০ শিল্পী। রাতভোর একুশ উদ্যাপনে চলে কবিতা, গান, নাটক ও নাচের অনুষ্ঠান। রাত ১২টা ১ মিনিটে করা হয় মশাল মিছিল।
আজ রবিবার সকালে কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন গ্রন্থাগার থেকে বের হয় প্রভাত ফেরি। এতে পা মেলান কলকাতার উপদূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারি সহ কলকাতার বিশিষ্টজনেরা। এরপরেই উপহাইকমিশনে নির্মিত শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে দিনের সূচনা হয়। অর্ধনমিত রাখা হয় বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। করোনার কারণে বিকেলে সংক্ষিপ্ত আকারে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে যোগ দেবেন কলকাতার শিল্পীসহ বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধিরা।
এছাড়াও কলকাতার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম চত্বরে নির্মিত ভাষা শহিদ উদ্যানের শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় , কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমসহ অন্যান্যরা। পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয় কলকাতার কার্জন পার্কে অবস্থিত ভাষা উদ্যানের শহিদ স্মারকে।
কলকাতার রবীন্দ্রভারতী এবং শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনটি পালিত হয় সাড়ম্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আলপনা আঁকেন সড়কে। আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা, প্রভাতফেরি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা সকালে প্রভাত ফেরি বের করে। প্রভাতফেরি শুরু হয় আন্তর্জাতিক হোস্টেল থেকে, শেষ হয় বাংলাদেশ ভবনে। এখানের শহিদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকেরা। এরপরে বাংলাদেশ ভবনে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
কলকাতার বেলেঘাটা মোড়, মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের ধাঁচে গড়া শহিদ মিনারেও এদিন শ্রদ্ধা জানান ভাষা প্রেমিকেরা। এ ছাড়া কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহর এবং গ্রামের স্কুল কলেজেও দিনটি পালিত হয় যথাযোগ্য মর্যাদায়।
যদিও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বেনাপোল-পেট্রাপোলে দুই বাংলার বৃহৎ আকারে ঐতিহ্যবাহী ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান এবার করোনা র কারনে সম্পুর বাতিল করা হয়েছে। তবে সংগঠন গুলির তরফে একক ভাবে ক্ষুদ্র আকারে কড়া পুলিশি কড়াকড়ির মধ্যে পালন করা হয়েছে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান।
ভাষাসৈনিক বরকতের গ্রাম মুর্শিদাবাদের বাবলা গ্রামেও দিনটি পালিত হয় সাড়ম্বরে। সকালে অনুষ্ঠিত হয় প্রভাতফেরি। বিকেলে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।