ভুবন বাদ্যকর। 'বাদাম বাদাম দাদা বাদাম বাদাম', এই গান তাঁকে পরিচিতি দিয়েছিল। এই গানের দৌলতেই সোশ্য়াল মিডিয়ায় স্টার হয়ে উঠেছিলেন ভুবন বাদ্যকর। তবে সেই সব এখন অতীত। আর কেউ খোঁজ নেয় না ভুবন বাদ্যকরের। 'বাদাম বাদাম' গান ভাইরাল হওয়ার পর ভালোই উপার্জন করতে শুরু করেছিলেন কুড়ালজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা ভুবন। বানিয়েছিলেন বিশাল বাড়ি। রীতিমতো অট্টালিকা। তবে এখন রোজগার বন্ধ। তাই বাড়ির কাজও সম্পূর্ণ করতে পারেননি।
কারণ, নিজের সেই বিখ্যাত বিখ্যাত গানের কপিরাইট তাঁর কাছ থেকে 'ছিনিয়ে' নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেজন্য থানা পুলিশ, কোর্ট কাছারি করেছেন। তবে ফল এখনও মেলেনি। সেই গানও আর কোনও অনুষ্ঠানে গাইতে পারেন না। করতে পারেন না পোস্টও। তাই মাথায় হাত ভুবনের। কারণ যে গান তাঁকে রাতারাতি জনপ্রিয় করেছিল, সেই গান করার অধিকারও তিনি হারিয়েছেন।
এমতাবস্থায় কয়েক মাস আগে থেকেই সংসারের অর্থনৈকিত অবস্থা ভেঙে পড়তে শুরু করে ভুবনের। একটি চারচাকা কিনেছিলেন। সেটি বিক্রিও করে দেন। বাড়ির কাজ এখনও সম্পূর্ণ করতে পারেননি। সেই অসম্পূর্ণ বাড়িতেই রয়েছেন। তবে এভাবে আর বসে বসে কতদিন ? স্ত্রী-ছেলে-বউমাদের নিয়ে সংসার। তা তো চালাতে হবে!তাই এবার ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিলেন ভুবন বাদ্যকর।
তবে এবার আর বাদাম ফেরি করবেন না। হয়তো গাইবেন না গানও। সেই আগের মতো পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বাদাম বেচবেন না। এবার তিনি ব্যবসা করবেন। তাও নিজের বাড়িতেই।
ভুবন বাদ্যকর জানান, 'আর তো কেউ ডাকে না। কলকাতা থেকে একজনের ডাকার কথা ছিল। কই ডাকল না তো। উপার্জন আর নেই। বাড়িতেই বসে আছি। কিন্তু এভাবে তো চলবে না বেশিদিন। ছেলে একটা কাজ করে। তবে উপার্জন অল্প। সংসার তো চালাতে হবে। তাই ফের বাদাম বিক্রি করব। তবে আগের মতো আর করব না। এবার বাড়িতেই দোকান দেব।'
ভুবন আরও জানান, ব্যবসা করারও তাঁর তেমন ইচ্ছে নেই। বাদাম বিক্রি করবেন বাধ্য হয়ে। তবে সেই বাদাম ভেজে দেবেন বাড়ির মহিলারা। তাই তিনি বিক্রি করবেন। ভুবনের কথায়, 'বাদাম কতটা বিক্রি হবে জানি না। সংসার তো চালাতে হবে। সেই কারণে করব। তবে বাদাম এখনও ওঠেনি। দিন দশেক পরে বাদাম উঠবে। সেই বাদাম ভেজেই দোকান থেকে বিক্রি করবেন।'
তাহলে কি আর গান করবেন না ভুবন ? গায়কের কথায়, 'জানি না কী হবে। মানুষ কি আমাকে মনে রেখেছে ? যদি ভগবান মুখ তুলে তাকান তাহলে আবার সব আগের মতো হবে।'