সন্ন্যাসীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনি চিঠি পাঠালেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের কার্তিক মহারাজ। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তাঁর মক্কেলের মানহানি হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন কার্তিক মহারাজের আইনজীবী। আগামী ৪ দিনের মধ্যে সেই চিঠির উত্তর দেওয়ার জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।
কার্তিক মহারাজের এই চিঠিটি সামনে এনেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে এই চিঠি পোস্ট করেন। তিনি যে কার্তিক মহারাজের সঙ্গে আছেন তা চিঠি থেকে কার্যত পরিষ্কার করে দেন। এক্স হ্যান্ডেলে চিঠি পোস্ট করে শুভেন্দু লেখেন, সনাতন ধর্মের উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণ করেছেন। সন্ন্যাসীদের আক্রমণ করেছেন। এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার জন্য পবিত্র সন্ন্যাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শ্রদ্ধেয় এবং সম্মানীয় স্বামী প্রদীপ্তানন্দ জি (কার্তিক মহারাজ) কে আমার প্রণাম। সত্য ও সনাতনীদের জয় হোক চিরকাল।'
কার্তিক মহারাজ চিঠিতে সাফ জানান, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের ফলে তাঁর মানহানি হয়েছে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের মন্তব্যের কোনও সারবত্তা নেই। অসত্য ও বিভ্রান্তকর মন্তব্য করেছেন তিনি। ওই চিঠিতে আগামী চার দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব না দিলে আইনি পদক্ষেপের কথাও বলা হয়েছে সেই চিঠিতে।
বিতর্কের সূত্রপাত গত শনিবার। সেদিন হুগলিতে একটি নির্বাচনী সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সব সাধু তো সমান হয় না। সব স্বজনও সমান হয় না। আমরাও কি সবাই সমান। এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। তারা আমার শ্রদ্ধার তালিকায় অনেক দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে আমি তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্টকে বসতে দেব না, সেই লোকটাকা আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ তিনি ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশের সর্বনাশ করছেন।'
এদিকে কার্তিক মহারাজকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়। রাজ্য বিজেপির তরফে এর তীব্র নিন্দা করা হয়। মুখ খোলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংখ্যালঘু কট্টরপন্থীদের ভোট পেতে মুখ্যমন্ত্রী সন্ন্যাসীদের আক্রমণ করছেন বলে প্রকাশ্য জনসভা থেকে মন্তব্য করেন তিনি।
বিষ্ণুপুরের সভা থেকে মোদী বলেন, 'তৃণমূল সাধুসন্তদের গালিগালাজ করছে। ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ বিভিন্ন বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাকে গৌরবান্বিত করেছে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সাধুরা এবং এই সংগঠনগুলি দেশকে নষ্ট করছে। আমার অভিযোগ, এখানকার মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম কট্টরপন্থীদের চাপে ভোট পেতে আমাদের সাধুদের এবং মহান সংগঠনগুলিকে গালিগালাজ করছেন।'