আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকরে ধর্ষণ ও খুনের মামলার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টায় সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে সিবিআই। মূল অভিযুক্ত থেকে প্রাক্তন অধ্যক্ষকে কয়েক ঘণ্টার ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে শনিবার ৬ জনের পলিগ্রাফ টেস্টও করানো হয়। সেজন্য দিল্লি থেকে একটি বিশেষ সিএফএসএল দল কলকাতায় গিয়েছিল। এ দিন পলিগ্রাফ টেস্ট হয়েছে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, সেই রাতে নাইট ডিউটিতে থাকা চার জুনিয়র ডাক্তার এবং একজন সিভিক ভলান্টিয়ারের।
মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্ট পিছিয়ে গিয়েছে। আগামিকাল, রবিবার তার পরীক্ষা হাওয়ার কথা। ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে সঞ্জয়। এ দিন ৬ জনের পরীক্ষা হয় সিবিআই অফিসে। এই মামলার পলিগ্রাফ টেস্ট জরুরি ছিল। সিবিআই জানতে চাইছে, কখন ও কীভাবে এই অপরাধ ঘটিয়েছিল সে? তার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত ছিল কি না! প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ শুরু থেকেই সন্দেহের মধ্যে। টানা ৯ দিন ধরে চলছে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। সিবিআই সূত্রের খবর, এখওন পর্যন্ত তাঁকে একশো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা।
কাঠগড়ায় সন্দীপ ঘোষ
প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা এখন কাঠগড়ায়। তিনটি প্রশ্ন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কখন ও কীভাবে সন্দীপ ঘোষ ঘটনার কথা জানতে পেরেছিলেন, কেন পুলিশে জানাতে দেরি হয়েছিল, কেন গাফিলতি দেখিয়েছিলেন! তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তও শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় সিবিআই আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা দায়ের করেছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর আলিপুর কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর-এর কপি পেশ করেছেন সিবিআই অফিসাররা।
প্রাক্তন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট আখতার আলির আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্দেশ
এক সিবিআই অফিসার জানিয়েছে, সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ করা হয়েছে তা হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করতেই। এ দিন আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তভারের নথিপত্র সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে বিশেষ তদন্তকারী দল। শনিবার সিবিআই এসআইটি থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করেছে। নতুন করে এফআইআর দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হাইকোর্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট আখতার আলির আর্জি করেছিলেন, সন্দীপ ঘোষ বহু দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
এই মামলায় চার জুনিয়র ডাক্তারকে পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হয়েছে। কারণ সেই রাতে নির্যাতিতার সঙ্গে তাঁরা ছিলেন। আগের রাতে একসঙ্গে খাবারও খেয়েছিলেন। সেই রাতে কী ঘটেছিল সে বিষয়ে তাঁরা আলোকপাত করতে পারেন। পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হয়েছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারেরও। তিনি সঞ্জয়ের বন্ধু বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে আগেই গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। সিবিআই তদন্ত হাতে নেওয়ার পর নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করেনি।