মেট্রোর ডিসপ্লে বোর্ড দেখাচ্ছে পরবর্তী মেট্রো আসবে ১০টা ৩৯ মিনিটে। কিন্তু সেই মেট্রোই এল ১০টা ৫০ মিনিটে। শনিবারের ঘটনা। দিনের পর দিন একই ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। কেউ কেউ বলছেন, আগে ভাবতেন মেট্রোয় সময়ে পৌঁছে যাবেন। এখন সেই ভরসা হারিয়েছে কলকাতা মেট্রো। কারণ টাইমটেবিল আছে, কিন্তু টাইমের ঠিক নেই!
যাত্রীদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের এত পরে ট্রেন ঢুকছে যে, পরের ট্রেনের সময় হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় পরপর দু’টি ট্রেনও বাতিল হচ্ছে। তুমুল বিভ্রান্তিতে খাবি খাচ্ছেন যাত্রীরা। নোয়াপাড়া থেকে দমদম ঢোকার পর দেখা যাচ্ছে প্রায় ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকছে মেট্রো। এদিন বেলগাছিয়া ঢোকার পর মেট্রোয় ঘোষণা করা হল, 'স্টেশন দমদম'! এক যাত্রী মুচকি হেসে বললেন। এরকম লেগেই আছে। কোনও কিছুই ঠিক নেই।
যাত্রীরাই জানাচ্ছেন, আচমকাই এক একটি মেট্রো ‘বাতিল’ হয়ে যাওয়ার ঘটনা এখন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেট্রো স্টেশনের ট্রেন টাইমিং ইন্ডিকেশন বোর্ডে যে সময় দেখানো হচ্ছে, সেই সময়ে মেট্রো আসছে না, উল্টে তা বাতিল হয়ে একেবারে পরের ট্রেন আসছে। রাতের দিকে এমনিতেই ১০ মিনিট অন্তর মেট্রো, তার উপর একটি ট্রেন না আসা মানে কুড়ি মিনিট ধৈর্য ধরতে হচ্ছে যাত্রীদের। আর দু’টি মেট্রো বাতিল হলে প্রায় আধ ঘণ্টার ভোগান্তি।
নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের তিন মিনিট পর্যন্ত দেরিতে মেট্রো এলে তাকে মেট্রোর তরফে ‘লেট’ ঘোষণা করা হয়। আর তারথেকেও বেশি হলে তাকে বাতিল বলা হয়। নিয়মিত কন্ট্রোলরুম থেকে গাড়ি চলাচলের রোস্টার বা লক শিট চিফ অপারেশন ম্যানেজার, তারপর জিএম হয়ে রেলবোর্ডের কাছে পৌঁছয়। লক শিটে অবশ্য কোনও মেট্রো বাতিল দেখানো হয় না। জানানো হয়, নিয়ম মেনে ২৮৮ মেট্রোই চলেছে সপ্তাহের কাজের দিনে।
দুপুরের দিকেও এক অবস্থা। কর্তৃপক্ষের কথায়, গোটা দিন ধরেই দু’এক মিনিট দেরি হতে হতে রাতের দিকে ট্রেনের সময়ের আর কোনও ঠিক থাকে না। বহু স্টেশনের এসকেলেটর খারাপ। বয়স্ক যাত্রীদের জন্য এখন কলকাতা মেট্রো আর সুবিধেজনক পরিবহণ ব্যবস্থা নয়, বলেই মনে করছেন সুব্রত রায়। বললেন, 'আগে মেট্রোয় উঠলে সময়ে পৌঁছে যেতাম। এখন আর মেট্রোর কোনও ভরসা পাচ্ছি না। রোজই বাতিল হচ্ছে মেট্রো।
রাতের দিকে শুধু দমদম পর্যন্ত মেট্রো। দক্ষিণেশ্বরের মেট্রো কম। তারওপর বাতিল তো লেগেই রয়েছে। মেট্রোর ভেতরে ভুলভাল ঘোষণা, এসকেলেটর খারাপ। কখনও মেট্রোর এসি থেকে বৃষ্টির মতো জল পড়ছে। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, কলকাতা মেট্রো জঘন্য পরিষেবার রেকর্ড তৈরি করতে চায়।'