কলকাতা পুরসভা উদ্যোগ নিয়েছে শহরজুড়ে ব্যক্তিগত মালিকানার বাজারগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। সেগুলির নিকাশি ব্যবস্থা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শৌচালয়-সহ বিভিন্ন পরিস্থিতি দেখে রিপোর্ট তৈরি করা হবে। শহরের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাজারগুলির মধ্যে রয়েছে বড় বাজারগুলি হল যদু বাবুর বাজার, কোলে মার্কেট, বৈঠকখানা বাজার, নারকেলডাঙ্গা বাজার, ছাতুবাবু বাজার এবং পর্ণশ্রী মার্কেট।
পুরসভার অফিসাররা জানাচ্ছেন, ওই বাজারগুলির মধ্যে বেশকয়েকটির পরিস্থিতি খুবই শোচনীয়। কিছুদিনের মধ্যেই পুরসভার বাজার, বিল্ডিং, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, আলো ও অন্য কয়েকটি বিভাগের অফিসারদের ১০ সদস্যের একটি দল বাজারগুলির পরিদর্শন করবে।
২৭ জুন নবান্নে একটি প্রশাসনিক বৈঠকের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার ক'য়েকটি বাজার-সহ জরাজীর্ণ ভবনগুলির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। বাজার করতে এসে মানুষ মারা যেতে পারে, এই উদ্বেগও প্রকাশ পায় তাঁর বক্তব্যে। তিনি বাজারগুলির মালিকদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবং অবিলম্বে সেগুলির সংস্কারে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুরসভা এর পরেই নড়েচড়ে বসে। যেকারণে পুর অফিসাররা শহর জুড়ে প্রতিটি ব্যক্তিগত বাজারের বিভিন্ন দিক মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবং বিল্ডিংগুলির রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে কথাবার্তা শুরু করার আগে বর্তমান মালিকদের খুঁজে বের করবেন।
যা যা প্রাথমিকভাবে করা হবে-
বাজারের বৈধ মালিক কে?
বাজারের বয়স কত?
রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা কি?
মালিকরা কি বিল্ডিংয়ের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনও টাকা খরচ করেন?
শেষ কবে বাজারটি মেরামত করা হয়েছিল?
নিকাশি ব্যবস্থা কি এবং স্টলগুলির অনুমোদিত শক্তি কী?
কীভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চলে?
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এই প্রাইভেট মার্কেটগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটির একাধিক মালিক রয়েছে এবং কিছু চিহ্নিত করা কঠিন। রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে তাঁদের সবাইকে নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন। জানা গেছে, শুধু যদুবাবুর বাজারেরই বর্তমানে ৫০ জন মালিক রয়েছেন। যেকারণে সবাইকে নিয়ে কাজ করাটা একটা চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে পুরসভা। কারণ সবার সম্মতি প্রয়োজন হবে। বাজারগুলিতে বিদ্যুৎতের তারের জটও বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে। পুরসভার এক অফিসার জানালেন, বাজারগুলিতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই। কিছু বাজারের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে বর্ষায়।
এদিকে, রাজ্য জুড়ে বেআইনি হকার উচ্ছেদ অভিযান চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পর তৎপর প্রশাসন। আগের বৈঠকে বাজার নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'লোকে বাজার করতে গিয়ে মারা যাবেন আমি বলে দিলাম। আমি সেদিন জগু বাবুর বাজারের বাজারের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। ববিকে (পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম) বললাম বাজারটা নতুন করে হচ্ছে না কেন। বলল মালিক করছে না। দরকার হলে মালিকের কাছ থেকে সরকারকে অধিগ্রহণ করতে হবে। ওই হাজারে হাজার মানুষ বসেন। মানুষের জীবনের দাম আগে।'