শহরের নিরাপত্তা আরও জোরালো করতে কলকাতার সবকটি থানাকে কড়া নির্দেশ দিলেন নগরপাল সৌমেন মিত্র। এদিন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং থানার ওসিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পাশাপাশি ভোরে শহরে নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবার কলকাতার সব থানাকে নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। শনিবার বিকেলে কলকাতা পুলিশের সমস্ত থানার ওসি এবং অ্যাডিশনাল ওসিদের নিয়ে ক্রাইম মিটিং করেন পুলিশ কমিশনার। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লালবাজারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে চলতি সপ্তাহেই ময়দান এলাকায় ঘটে যাওয়া ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, বৈঠকে নগরপাল বলেন ভোরবেলায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য নাগরিকর মর্নিংওয়াক, জগিং, সাইক্লিং করতে বেরন। তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সমান ভাবে প্রয়োজন। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ময়দানের পাশাপাশি যেসব থানা এলাকায় পার্ক, লেক বা প্রাতঃভ্রমণের স্থান রয়েছে, সেই সব জায়গায় পুলিশি নিরাপত্তা আরও বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত থানার ওসিকে৷
সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবর, ঢাকুরিয়া লেক, ময়দান সহ একাধিক পার্ক এলাকায় পুলিশের নজরদারি এবং পেট্রোলিং বাড়াতে হবে বলে নির্দেশ দেন সিপি। পুলিশ সূত্রে খবর, আজকের বৈঠকে পুলিশ কমিশনার মন্তব্য করেন, পুলিশকে আরও বেশি দৃশ্যমান হতে হবে। রাস্তায় বেরিয়ে যেন পুলিশকে খালি চোখে দেখা যায়। কারণ পুলিশকে দেখলে নাগরিকরা মনে সাহস পান, পুলিশ শূন্য রাস্তায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে শহরবাসী। তাই পুলিশকে আরো বেশি করে রাস্তায় থাকতে হবে, যাতে কোনো অপরাধ ঘটলেই দ্রুত পুলিশের নজরে আনা যায়।
এছাড়াও সাইবার ক্রাইম কমানোর জন্য আরো প্রচার বাড়াতে নির্দেশ দেন নগরপাল সৌমেন মিত্র। পাশাপাশি আগের বছরের তুলনায় ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মতো অপরাধের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, লালবাজারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বৈঠকে বলেন, ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনায় নাগরিকদের সচেতন করতে গত বছর 'রক্ষাকবচ' নামে এক সচেতনমূলক প্রকল্প চালু করেছিল কলকাতা পুলিশ। এই প্রকল্পে বিভিন্ন আবাসন এবং পাড়ায় পাড়ায় লালবাজারের আধিকারিকরা গিয়ে নাগরিকদের সচেতন করতেন। সেই প্রচার যথেষ্ট ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এক কর্তা। যে কারণে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে তুলনামূলক ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা কমেছে বলে মনে করছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরেই পুলিশ কমিশনার নির্দেশ দেন, লকডাউন সম্পূর্ণভাবে উঠে গেলে যেন এই 'রক্ষাকবচ' প্রকল্প ফের শুরু করা হয়।
এছাড়াও ঈদ উৎসবকে মাথায় রেখে শহরের নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করতে সব থানার ওসিদের নির্দেশ দেন নগরপাল। এখন থেকেই ঈদের নিরাপত্তার পরিকল্পনা শুরু করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় বৈঠকে। পাশাপাশি ভালো পারফরম্যান্স এর জন্য একাধিক থানার ওসিদের ভূয়সী প্রশংসা করেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। শহরের যে সমস্ত সংবেদনশীল এলাকায় অপরাধের প্রবণতা রয়েছে, সেসব থানা এলাকার ওসিদের আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় লালবাজার এর তরফে।