কলকাতা পুলিশের টালা থানার ওসি (অফিসার ইন-চার্জ) অভিজিৎ মণ্ডল এবং আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সিবিআই গুরুতর অভিযোগ এনেছে। সিবিআই-এর তদন্তে উঠে এসেছে যে, অভিজিত তদন্তে গাফিলতি এবং অপরাধী সঞ্জয় রায়কে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। এছাড়াও, শ্মশানে তড়িঘড়ি মৃতদেহ দাহ করার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সিবিআই-এর প্রাপ্ত নথি অনুসারে, টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে ৯ আগস্ট সকাল ১০:০৩-এ আরজি কর হাসপাতালের নীতি বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনার খবর জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি অপরাধস্থলে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন এবং প্রায় এক ঘণ্টা পরে সকাল ১১ টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সিবিআই-এর অভিযোগ, মণ্ডল ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছেছিলেন, যা তদন্তে গাফিলতির প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সিবিআই আরও দাবি করেছে যে, পুলিশ রেকর্ডে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, মৃতদেহ সেমিনার রুমে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে চিকিৎসকরা আগে থেকেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিলেন। সিবিআই সন্দেহ করছে যে, অভিজিৎ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মিলে প্রমাণ লোপাট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন।
সিবিআই আরও অভিযোগ করেছে যে, ওসি অপরাধস্থল সংরক্ষণের জন্য কোনও উদ্যোগ নেননি, যার ফলে অপরাধস্থলে অননুমোদিত ব্যক্তিদের প্রবেশ করতে এবং প্রমাণ নষ্ট করতে সহায়তা হয়েছে। সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে যে, এই অপরাধের রিপোর্ট দাখিল করতে কলকাতা পুলিশ ১৪ ঘণ্টার বেশি সময় নেয়। এমনকি পরিবারের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের দাবি থাকলেও মণ্ডল তড়িঘড়ি করে শ্মশানে দাহ সম্পন্ন করতে দেন।
অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়, যে এই ঘটনার মূল অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত, তার বিরুদ্ধে তদন্তে দেরি করার জন্যও মণ্ডলকে দায়ী করা হয়েছে। অপরাধের পরে সঞ্জয়ের পোশাক এবং অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে দুদিনের বেশি বিলম্ব করা হয়, যা সিবিআইয়ের সন্দেহভাজন ষড়যন্ত্রের প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
সিবিআই-এর অভিযোগ, মণ্ডল এবং অন্যদের মিলে তদন্তের দিক পরিবর্তন এবং অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন। বর্তমানে সিবিআই তদন্ত চলছে এবং এই গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে মণ্ডল ও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।