কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রতিনিয়তই নতুন নতুন বিষয় সামনে আসছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একদিকে যেখানে সারাদেশের চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। অন্যদিকে, এখন সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছে। এ ছাড়া হাসপাতাল প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন নিহত চিকিৎসকের মা।
মেয়ে অসুস্থ, হাসপাতাল থেকে ফোন আসে
নিহতের মা বলেন, প্রথমে হাসপাতাল থেকে ফোন আসে আপনার মেয়ে অসুস্থ, পরে কল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর আবার ফোন করে জানতে চাইলে কী হয়েছে, তারা আমাকে হাসপাতালে আসতে বলে। হাসপাতালে পৌঁছলে মেয়েকে দেখতে দেওয়া হয়নি। বিকেল ৩টের সময় আমরা মেয়ের অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে যাই।
'আমাদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে'
মা জানান, মেয়ের নিম্নাঙ্গ অনাবৃত ছিল। শরীরে একটি মাত্র কাপড় ছিল। তার হাত ভেঙ্গে গিয়েছিল এবং তার চোখ ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কেউ তাকে খুন করেছে। আমি পরিষ্কার বলেছি এটা আত্মহত্যা হতে পারে না। আমরা আমাদের মেয়েকে ডাক্তার বানানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি, কিন্তু তাকে খুন করা হয়েছে।
আরও ক'য়েকজন জড়িত
"মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপরাধীকে গ্রেফতার করা হবে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছুই হয়নি। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তবে আমি নিশ্চিত এর সঙ্গে জড়িত আরও অনেকে। আমি মনে করি এই ঘটনার জন্য পুরো বিভাগ দায়ী। পুলিশ মোটেও ভালো কাজ করেনি। আমি মনে করি মুখ্যমন্ত্রী বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করছেন, তিনি আজ এখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন যাতে লোকেরা প্রতিবাদ করতে না পারে।"
পুলিশ কমিশনার (সিপি) সম্পর্কে, তিনি বলেন, "তিনি আমাদের সঙ্গে মোটেও সহযোগিতা করেননি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তার চেষ্টা ছিল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ময়নাতদন্ত করার পরে লাশটি সরিয়ে নেওয়া হোক। "
পুলিশ প্রশাসনে প্রশ্ন চিহ্ন
নির্যাতিতার মায়ের এই বক্তব্য পুলিশ-প্রশাসনে প্রশ্ন চিহ্ন তুলেছে। মামলার তদন্ত নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে এবং এই ঘটনা রাজ্য সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বলেন, 'এ ঘটনায় নিহত চিকিৎসকের বাবা বলেন, এখন পর্যন্ত তদন্তে কোনও ফল আসেনি। আমরা আশাবাদী আমরা ন্যায়বিচার পাবো। বিভাগীয় কেউ বা কলেজও আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি। এতে পুরো বিভাগ জড়িত। শ্মশানে তিনটি মৃতদেহ ছিল, কিন্তু আমাদের মেয়েকে প্রথমে দাহ করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী ন্যায়বিচার দেওয়ার কথা বলছেন, কিন্তু যারা বিচারের দাবি করছেন তাদের কারাগারে রাখার চেষ্টা চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমাদের কোনও সন্তুষ্টি নেই। আমরা কোনও ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করেছি।"