এপ্রিলে পার্কিং ফি বাড়ানো নিয়ে পুরসভা-নবান্ন সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে পার্কিং ফি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় পুরসভা। তারপর কলকাতার বর্ধিত পার্কিং ফি কত হওয়া উচিত, তা নবান্নের কাছেই জানতে চেয়েছে কলকাতা পুরসভা। পার্কিং ফি বাড়ানোর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে এবার হকারদের ফি বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের কোর্টেই ফেল বল ঠেলল পুরসভা।
পুরসভা হকারদের ভেন্ডিং সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করেছিল। এছাড়াও ২ হাজার টাকা বার্ষিক চার্জ হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা হকারদের প্রাথমিকভাবে বর্জ্য ছাড়পত্রের জন্য দিতে হবে। কলকাতার টাউন ভেন্ডিং কমিটি - যা পুর-আধিকারিক, হকার, পুলিশ এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত - হকারদের উপর এই দুটি চার্জ ধার্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু কলকাতা পুরসভা এটি চালু করার আগে রাজ্য সরকারের অনুমোদন নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার যদি ফি বাড়ানোর প্রস্তাবে রাজি হয়, তাহলে পুরসভা জানতে চাইবে ফি কত হওয়া উচিত।
পুরসভা সূত্রে খবর, বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে তুলে ধরা হবে। এবং তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন। পার্কিং ফি বাড়িয়ে বিপত্তিতে পড়েছিল পুরসভা। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।
পুরসভা রাজ্য সরকারকে কিছু ভারতীয় শহরে পার্কিংয়ের হারের তুলনামূলক রিপোর্ট পাঠিয়ে কলকাতার রেট কত হওয়া উচিত জানতে চেয়েছিল। এক্ষেত্রেও তেমনটাই করা হচ্ছে।
গত ৭ এপ্রিল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র এবং দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের একটি সংবাদ সম্মেলনের পরে পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত খারিজ করা হয়। কুণাল জানান, ওই সিদ্ধান্তে মুখ্যমন্ত্রীর সায় নেই।
এবার হকারদের চার্জের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত, পুরসভা ভেন্ডিং সার্টিফিকেট বিলি করবে না। আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট এবং এসপ্ল্যানেড থেকে ১২০ জন হকারকে ভেন্ডিং শংসাপত্র হস্তান্তরের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। পরে আরও হকারদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। কলকাতার টাউন ভেন্ডিং কমিটির এক সদস্য জানান, ভেন্ডিং সার্টিফিকেটে হকারের নাম, বয়স ও ঠিকানা, যে বিল্ডিংয়ের সামনে হকারের স্টল আছে তার ঠিকানা, স্টলের আকার এবং বিক্রি করা সামগ্রী থাকবে।
রাস্তার বিক্রেতা (প্রোটেকশন অফ লাইভলিহুড অ্যান্ড রেগুলেশন অফ হকিং) অ্যাক্ট ২০১৪, পার্লামেন্ট দ্বারা পাস হয়েছে, হকারদের নিয়ন্ত্রণ করতে এবং নিয়ম লঙ্ঘন করলে তাদের ভেন্ডিং সার্টিফিকেট বাতিল করতে ভেন্ডিং কমিটিকে ক্ষমতা দিয়েছে।